ঠাকুরগাঁওয়ে বন্যায় কাঁচা-পাকা রাস্তা, সেতু ও কালভার্ট ভেঙ্গে যাওয়ায় ভোগান্তির হচ্ছে পথচারি ও স্থানীয়রা। আর কর্তৃপক্ষ বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা, সেতু ও কালভার্টের পরিসংখ্যান তৈরি করে সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সংস্কারের কাজ চলছে।
সম্প্রতি উজানের ঢল আর টানা বর্ষণে ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর, রাণীশংকৈল, পীরগঞ্জ, বালিয়াডাঙ্গী ও সদর উপজেলায় ৪৬টি ইউনিয়নের সহস্রাধিক গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়। ডুবে যায় বাড়িঘড় ও রাস্তাঘাট। পানির স্রোতে ভেঙ্গে যায় সেতু ও কালভার্ট। বন্যার এক সপ্তাহের মধ্যে পানি শুকিয়ে গেলে ভাঙ্গাচোরা রাস্তা সাধারণ মানুষের চলাচলে ব্যহত হয়। কিছু কিছু রাস্তা বেশি ভেঙ্গে যাওয়ায় কয়েক কিলোমিটার পথ ঘুরে ভিন্ন রাস্তা দিয়ে যেতে হয় গন্তব্যস্থলে। ফলে রাস্তা, ব্রিজ ও কালভার্ট দ্রুত সংস্কার না করা হলে স্থানীয়রাসহ সাধারণ মানুষ আরো বেশি দুর্ভোগের শিকার হবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) ঠাকুরগাঁও অফিস সুত্র জানায়, এলজিইডি'র আওতায় ১ হাজার ৫২ কিলোমিটার পাঁকা রাস্তার মধ্যে সদর উপজেলায় ২৫, রাণীশংকৈলে ৪, পীরগঞ্জে ১০, হরিপুরে ৯ ও বালিয়াডাঙ্গীতে ১৮ কিলোমিটার পাকা রাস্তা বন্যায় ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে তিন হাজার ৭০০ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তার মধ্যে সদর উপজেলায় ৬১, রাণীশংকৈলে ৩১, পীরগঞ্জে ৪১, হরিপুরে ৩৭ ও বালিয়াডাঙ্গীতে ৫০ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা বন্যায় ক্ষতি হয়েছে। আর ছয় হাজার ২৮৯টি সেতু ও কালভার্টের মধ্যে সদর উপজেলায় ৬ সেতু ২৩টি কালভার্ট, রাণীশংকৈলে ২ সেতু, ৭ টি কালভার্ট, পীরগঞ্জে ৫ সেতু, ১৯ টি কালভার্ট, হরিপুরে ৫ সেতু ১৬ টি কালভার্ট ও বালিয়াডাঙ্গীতে ৪ সেতু ২১ টি কালভার্ট বন্যার কারণে ভেঙ্গে পরেছে।
সদর উপজেলার সুখানপুখুরি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান জানান, আমার ইউনিয়নের কালিকাগাঁও এলাকার মল্লিকপাড়া, মুন্সিপাড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের রাস্তাঘাট, সেতু ও কালভার্টের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ওইসব এলাকার মানুষ স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারছে না। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে কৃষি পণ্য নিয়ে বাজারে যেতে। আমি আশা করবো দ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) ঠাকুরগাঁওয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী কান্তেশ্বর বর্মন জানান, এ বন্যায় কাঁচা-পাকা, রাস্তা, ব্রীজ ও কালভার্ট যে পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩৬ কোটি টাকা। সরকারে নির্দেশে বন্যা দুর্গত এলাকার সকল রাস্তাঘাট, সেতু, কালভার্ট দ্রুত মেরামত করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট, সেতু, কালভার্টের পরিসংখ্যান সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। ঊর্ধতন কর্মকর্তাগণ তা সংস্কারে পদক্ষেপ নিতে বলেছেন। এলজিইডির কর্মকর্তাগণ সারাক্ষণ তদারকির মাধ্যমে সংস্কারের কাজ করছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে জেলার ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট, সেতু, কালভার্ট চলাচলের উপযোগী হবে।
বিডি প্রতিদিন/২৫ আগস্ট, ২০১৭/ফারজানা