ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। আজ পবিত্র ঈদুল আযহা। কিন্তু ঈদের আনন্দ নেই আশুলিয়ার ধামসোনা ইউনিয়নের বন্যাকবলিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে। বন্যায় কবলিত শতশত পরিবার এখনও তাদের বসত বাড়িতে ফিরতে পারেনি। নলাম সেতু গাইড বাঁধ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নেয়া বানভাসী এসব মানুষের কষ্টের সীমা নেই। ঈদের আমেজও নেই তাদের মধ্যে।
সরেজমিনে বিভিন্নস্থানে গিয়ে দেখা যায়, বানভাসী মানুষ অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তারা কোন মতে বেঁচে আছেন। এবার সাভার উপজেলায় দুই দফা ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েন কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষ। সহস্রাধিক বাড়িঘর চলে গেছে নদীগর্ভে। সহায় সম্বল হারানো মানুষের জীবন অতিবাহিত করতেই নাভীশ্বাস। সেখানে এবারের ঈদে তাদের নেই কোন অনুভূতি। লাগেনি ঈদের আনন্দের ছোঁয়া। ক্ষোভ প্রকাশ করে আশ্রয় নেয়া বানভাসী অনেকেই জানান, খোলা আকাশের নিচে ঝুপড়ি তুলে মানবেতর জীবন যাপন করছি। কোন জনদরদী-জনপ্রতিনিধি বা সরকারি কোন লোকজন দেখতে আসেনি। সামনে ঈদ অথচ নিচের বসত ভিটায় যেতে পারছি না। ঘরে খাবারও থাকে না। শুকনা খাবার ছাড়া দু'বেলাও বেলা ভাত খেতে পারছি না। ঈদ কবে সেটাও ভুলে গেছি। সন্তানদের নিয়ে কোন রকমে এই খোলা আকাশের নিচে বেঁচে আছি।
সেতু গাইড বাঁধে স্কুলে আশ্রয় নেয়া জবেদা ভানু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বহু কষ্টে আছি। ছাউনি তুলে রাস্তার বাস করছি। মাইজেল এলাকার আশ্রয় নেয় রহিমা বেগম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন , বাড়ি থেকে পানি নেমে গেলেও এখনও বসবাসের উপযুক্ত হয়নি। বাধ্য হয়েই রাস্তায় খোলা আকাশের নিচে খুব কষ্টে বসবাস করছি। সন্তানদের নিয়ে কোন রকমে দিন কাটাচ্ছি,আমাদের সন্তানদের এবার নতুন জামাকাপর কিনে দিতে পারেনি। ঈদের কথা বললে তিনি আরো বলেন গরীবের আবার ঈদ, এক বেলা খাবার জটে না । বন্যায় সব ভাইসা নিয়ে গেছে। এক বেলা শুকনা খাবার খেয়ে ঈদ পার করছি , রশিদ মিয়া বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন আমাদের সমাজের মধ্যে এমন অনেক পরিবার আছে তারা ঈদ উপলক্ষে নতুন কাপড় কেনা তো দূরের কথা, সামান্য মিষ্টিমুখ করে ঈদগাহে যেতে পারে না ।
স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. এনামুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন- বন্যা কবলিতদের সরকারি ভাবে সাহায্য করা হয়নি। ধামসোনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত ভাবে যথাসাধ্য সাহায্য করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের আরও সাহায্য করা হবে। প্রকৃতির নিয়ম মেনেই সুখে-দুখে আমাদের জীবন কাটাতে হবে। ঈদে কিছুটা কষ্ট হলেও আশা করছি বন্যার্তরা পরিবেশের সাথে নিজেদেরকে মানিয়ে নিবেন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার