নেত্রকোনার ঠাকুরাকোনায় কিশোরী পান্নাকে গণধর্ষণ ও আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার ঘটনার মামলা নিতে বিলম্বসহ তদন্তে গাফিলতি এবং বাদির সাথে খারাপ ব্যবহার করায় নেত্রকোনা মডেল থানার ওসির প্রত্যাহার চেয়ে মানববন্ধন করেছে নাগরিক সমাজ। আজ বিকাল ৬ টায় নেত্রকোনা শহরের মোক্তারপাড়ায় ঠাকুরাকোনা সচেতন নাগরিক সমাজের আয়োজনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এ সময় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি, মানবাধিকার সংরক্ষণ পরিষদসহ ঠাকুরাকোনার সচেতন নাগরিক সমাজ মানববন্ধনে অংশ নেয়।
এ সময় বক্তরা বলেন, পান্নার লাশ বারবার কবর থেকে উত্তোলন করা এবং ২য় বারের মত ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনায় না করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ মর্গে ৩দিন ধরে ফেলে রাখার প্রতিবাদ করেন তারা। বক্তারা আরও বলেন, আসামিদের স্বীকারোক্তি থাকা সত্বেও হাসপাতালের আওএমও এবং স্থানীয় চেয়ারম্যান উৎকোচের বিনিময়ে রিপোর্ট নিয়ে হেরিফেরি করায় আর এমওকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, এডভোকেট নজরুল ইসলাম, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির কহিনুর বেগম, কলেজশিক্ষক পূরবী সন্মাণিত, ঠাকুরোকোনা বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. জিয়াউর রহমান, মানবাধিকার কর্মী আব্দুল হাই, মো. শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
গত ৩ সেপেটম্বর বিকালে সদর উপজেলার ঠাকুরাকোনা রেল কলোনির রিক্সাচালক চাঁন মিয়ায় কিশোরী পান্নাকে রেলাইনের অদূরে সুলতানের ফিশারী ঘরে ডেকে নিয়ে যায় অপু, মামুন ও সুলতান। পরে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। খবর পেয়ে রাত আটটার দিকে কিশোরীর মা ওই ঘরে ঢুকে ধর্ষকদের হাতে পায়ে ধরে মেয়েকে নিয়ে আসে। পরদিন রেললাইনের অপর পাশের এক খালি ঘর থেকে কিশোরীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার এক সপ্তাহেও মামলা না নেয়ায় সচেতন নাগরিকদের বিক্ষোভের মুখে ১০ সেপ্টেম্বর থানায় মামলা নেয় পুলিশ। পরবর্তীতে মামলার ৩ আসামির মধ্যে মামুন এবং অপুকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করলে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী নিয়ে আদালত জেল হাজতে দুজনকে প্রেরণ করে।
অন্যদিকে প্রথম ধাপে ময়নাতদন্তে গাফিলতি এবং বিপোর্ট গোপন করার অভিযোগে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মুস্তাফিজুর রহমানকে প্রত্যাহার করা হয়। গত ১৪ সেপ্টেম্বর আদালতের নির্দেশে পুনঃময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ লাশ উত্তোলন করে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। হাসপাতাল কর্ক্ষৃপক্ষ নেত্রকোনায় ময়নাতদন্ত না করে লাশ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। এদিকে কিশোরী স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকের বাড়িতে গৃহ পরিচারিকা হিসেবে দীর্ঘ বছর কর্মরত ছিল। অপরদিকে মামলার আসামি কৌশিক সরকার অপু চেয়ারম্যানের ভাইয়ের রড সিমেন্টর দোকানের কর্মচারী ছিল। বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানায়, মামলার আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদেরকে বিভিন্ন কৌশলে বাঁচানোর অপচেষ্টা চলছে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার