রাঙামাটিতে পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বোরো ধানের জমি। সে পানিতে ডুবে গেছে সোনালী ফসল। একই সাথে ভেঙেছে কৃষকের স্বপ্নও। সব হারিয়ে দিশেহারা পাহাড়ি অঞ্চলে কৃষকেরা। বর্ষার মৌসুম শেষ হয়ে গেলেও, থামেনি বৃষ্টি। এখনো প্রতিদিন অব্যাহত আছে পাহাড়ে বর্ষার সেই বর্ষণ। তাতেই একদিকে বাড়ছে হ্রদের পানি। অন্যদিকে ধস নেমেছে কৃষকের সোনালী ফসলে।
জুরাছড়ি উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান উদয় জয় চাকমা জানান, সম্প্রতি রাঙামাটিতে অতি বৃষ্টির কারণে জুরাছড়ি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বোরো ধানক্ষেত বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে-জুরাছড়ি উপজেলার লুলাংছড়ি, চুমাচুমি, সামিরা, ঘিলাতলী, শীলছড়ি, মৈদং ইউনিয়ন, বারাবান্য, মন্দিরাছড়া, জামেরছড়ি, তালুকদার পাড়া, নলবনিয়া, পানছড়ি মূখ, হাজাছড়ি, উবুকছড়ি, তিন টিলা, মরল্যাছড়া, ফকিরাছড়া এবং দুমদুম্যা ইউনিয়নের বস্তিপাড়া, বরকলক, তারাবনিয়ার হাজার হাজার মাইল বোরো ধানক্ষেত। এসব এলাকার প্রায় ৮০ ভাগ ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।
জুরাছড়ি উপজেলার স্থানীয় বোরো ধানচাষী ফুলমূখি চাকমা জানান, ''সবেমাত্র ধান পেকেছে। আর কয়দিন পর সে সোনালী ফসল ঘরে তোলা হতো। তবে এরই মধ্যে বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে ধানক্ষেত। কিছুই করার ছিল না। এখন পুরোটা বছর জুড়ে খাদ্য সংকটে দিন কাটাতে হবে।''
ক্ষতিগ্রস্ত আর এক কৃষাণী গুরিকা চাকমা। তারও একই দশা। বানের পানিতে আগেই ভেসে গেছে বাড়ি-ঘর। আর এখন কষ্টের ফসল নষ্ট করেছে বৃষ্টির পানি। তিনি বলেন, ''ঋণ করে জমিতে ফসল বোপন করেছিলাম। ভেবেছিলাম সে ফসল বিক্রি করে ঋণ শোধ করবো। কিন্তু তা আর হলো না। জমি থেকে আসতে আসতে পানি কমতে শুরু করেছে। তবে লাভ নেয়। সে ফসল এখন শুকিয়ে কাট হয়ে গেছে। মরে গেছে সব ধান গাছ। কিছুই বুঝতে পারছি না সংসার কিভাবে চলবে।''
এ ব্যাপারে জুরাছড়ি উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কাজী শফিকুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে ২শ' ৪৮ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। ফসলও হয়েছে বাম্পার। তবে সম্প্রতি অতিবৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলের কারণে ৭-৮ হেক্টর ধানী জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। ফসল ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কৃষকদের সময় লাগবে।
বিডি-প্রতিদিন/১৫ অক্টোবর, ২০১৭/মাহবুব