বরিশালের গৌরনদী উপজেলার চাঁদশী ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এস,এম লিটন একই সঙ্গে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে দায়িত্ব পালন করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরকারি বিধিমালা লঙ্ঘনের এই ঘটনা জেনেও কোন বিভাগীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেনা উজিরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। দুটি পদে থেকে সরকারি সুযোগ সুবিধা ভোগ করায় এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয় বাসিন্দা এবং চাঁদশী ইউপি সূত্র জানায়, গত বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে ইউপি নির্বাচনে সরকারি গৌরনদী কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম লিটন গৌরনদী উপজেলার চাঁদশী ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নির্বাচিত হন।
এরপর থেকে তিনি ইউপি সদস্যের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ২০১৭ সালের ২৪ এপ্রিল ইউপি সদস্য এস,এম লিটন উজিরপুর উপজেলার হস্তিশুন্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে চাকুরিতে যোগ দেন।
এরপর তিনি সরকারি নিয়মনীতি অনুযায়ী ইউপি পরিষদের সব কার্যক্রমে অংশ নেন ও কাগজপত্রে স্বাক্ষর করেন। এমনকি তিনি ইউপির নিয়মিত সভায় যোগদান করে সরকারি সুযোগ সুবিধা ভোগ করে আসছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গৌরনদীর দক্ষিণ চাঁদশী গ্রামের বাসিন্দাদের প্রশ্ন তাদের এলাকার মেম্বার কিভাবে একই সঙ্গে জনপ্রতিনিধি ও সরকারি চাকরি করেন। সরকারি চাকরির বিধিমালা ও জনপ্রতিনিধিত্ব আইন লংঘন করার অপরাধে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন তারা।
উজিরপুরের হস্তিশুন্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নূপুর কর্মকার জানান, সহকারী শিক্ষক এস,এম লিটন ইউপি সদস্য কিনা তা তিনি জানেন না। গত ১১ অক্টোবর থেকে সে (লিটন) একমাসের মেডিকেল ছুটিতে আছেন। তবে লিটন প্রায়ই সময়মতো স্কুলে আসেন না। হাজিরা খাতায় ও মাসিক রির্টানে লাল কালি দিয়ে লিখে রাখায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সম্প্রতি লিটনের ৫দিনের বেতনও কর্তন করেন।
উজিরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শহিদুল ইসলাম জানান, লিটন বিদ্যালয়ে যোগদানের পরই ইউপি সদস্যের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে তাকে জানিয়েছেন। দুই পদে দায়িত্ব পালন করা সরকারি বিধি লংঘন বলে তিনি জানিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
গৌরনদী উপজেলার চাঁদশী ইউপি চেয়ারম্যান কৃষ্ণকান্ত দে জানান, তার পরিষদের সদস্য লিটনের সরকারি চাকরি হওয়ার কথা লোকমুখে তিনিও শুনেছেন। তবে লিটন এ বিষয়ে তাকে কিছু বলেনি এবং ইউপি সদস্য পদ থেকে পদত্যাগও করেননি।
গৌরনদীর চাঁদশী ইউপির সদস্য ও উজিরপুরের হস্তিশুন্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এস,এম লিটন জানান, দুই পদে থাকলে সরকারি বিধিমালা লঙ্ঘনের বিষয়টি তিনি জানতেন না। তিনি শীঘ্রই ইউপি সদস্যের পদ থেকে পদত্যাগ করার কথা বলেন।
বিডি প্রতিদিন/ ২৬ অক্টোবর, ২০১৭/ ই জাহান