মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগ তুলে নরসিংদীর শিবপুরের আজিজা খাতুন (১৪) নামের এক কিশোরীকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। আজ ভোরের দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহতের স্বজন ও পরিবারের অভিযোগ, মোবাইল চুরির অভিযোগে মেয়েটিকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তবে পুলিশ বলছে, চুরির অপবাদ সইতে না পেরে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে। নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা খৈনকুট গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত স্কুলছাত্রী আজিজা খাতুন (১৩) খৈনকুট গ্রামের আবদুস সাত্তারের মেয়ে। সে স্থানীয় প্রাইমারী স্কুলের ছাত্রী। তার বাবা সাত্তার স্থানীয় একটি মুরগীর খামারে চাকরি করেন।
দুপুর সাড়ে ১২টায় এ রিপোট লেখা পযর্ন্ত নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে।
নিহত আজিজার ভাই সুজন জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাড়ির আঙিনা থেকে কয়েকজন লোক আজিজাকে ধরে নিয়ে যায়। প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে একটি উচু টিলায় নিয়ে তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে দেয়ে। পরে পাষণ্ডরা তার শরীরে দিয়াশলাই দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। তার আত্মচিৎকারে এলাকার লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে আগুনে পুড়তে দেখে। পরে স্থানীয়রা পানি ঢেলে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালায়। ততক্ষণে তার শরীরের অনেকখানি ঝলসে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে রাত দেড়টার দিকে আজিজাকে ঢামেকে পাঠানো হয়।
সুজন আরও জানান, আট-দশ দিন আগে তাদের চাচির একটি মোবাইল সেট চুরি হয়। চাচির মা ও অন্য স্বজনরা এর জন্য আজিজাকে সন্দেহ করে। তারা হুমকি দেয়, এক সপ্তাহের মধ্যে মোবাইল ফোন ফেরত না দিলে আজিজাকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেবে। যারা আজিজাকে পুড়িয়ে দিয়েছে তাদের চিনতে না পারলেও এই ঘটনার জন্য চাচি ও তার স্বজনদেরই সন্দেহ করছেন তারা।
এদিকে শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সৈয়দুজ্জামান জানান, কিশোরীকে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে কোনও প্রমাণ এখনও আমাদের হাতে আসেনি। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে আপবাদ সহ্য করতে না পেরে মেয়েটি নিজে গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। তবে তদন্ত চলছে। তদন্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ পযর্ন্ত নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
বিডি প্রতিদিন/২৮ অক্টোবর ২০১৭/হিমেল