ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের ইজাব উদ্দিন পাড়ার উত্তর পশ্চিম পূর্ব পার্শ্বে বিশ্ব রোড সংলগ্ন রাস্তায় ২৬ ফুট দৈর্ঘ্য একটি ব্রিজ নির্মাণ করে উপজেলা প্রকল্প দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। যা যানবাহন চলাচলে কোন কাজে আসছে না। পায়ে হেটে মূল রাস্তায় এসে যানবাহনে উঠতে হচ্ছে ওই এলাকার মানুষের। ফলে ব্রিজ নির্মাণের সঠিক সুফল এখানো পাচ্ছে না এলাকাবাসী।
রাস্তা নির্মাণ না করে সরকারের অর্থ বরাদ্দ নিয়ে অসময়ে অহেতুক ব্রিজ নির্মাণ করা ঠিক হয়নি বলে মনে করছেন শুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের গ্রামের সোহরাব আলী, হুমায়ুন, হারুন অর রশিদ ও আজগর আলীসহ অনেকে জানান, এ এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল রাস্তা নির্মাণের। কিন্তু রাস্তা তৈরি না করে অযথা ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। যা যানবাহন নিয়ে যাতায়াতে কোন কাজে আসছে না। জমির উপর দিয়ে সরু রাস্তায় পায়ে হেটে মূল রাস্তায় আসতে হচ্ছে। আগের মতই ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। সেই সাথে কৃষকের উৎপাদিত পণ্য নিয়েও ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে। ঘুরে যেতে হচ্ছে অনেক পথ।
তারা বলেন, আমাদের কাঙ্খিত আশা পূরণ হয়নি। আমরা আশা করবো প্রশাসনের পক্ষ থেকে যেন দ্রুত রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়। তাহলে এ এলাকার মানুষ সহজেই গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারবে।
সু-শাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফসহ শুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা জানান, সরকারের অর্থ বরাদ্দ বাস্তবায়নে সরকারি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের আরো সচেতন হওয়া প্রয়োজন। আমরা দেখেছি যেটা যেখানে দরকার সেটা সেখানে না করে মানুষের কাজে আসেনা এমন জায়গায় লাখ লাখ টাকা খরচ করে বছরের পর বছর অবকাঠামোগত উন্নয়ন ফেলে রাখা হয়েছে। এ ব্রিজটি নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা অুনমোদন দিয়েছে বলেই তা বাস্তবায়ন হয়েছে। এর দায়ভার তার উপরে বর্তায়। সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে কিছু টাকা ভাগাভাগি করতেই অপরিকল্পিত উন্নয়ন করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি।
এ বিষয়ে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সামিউল মার্ডি জানান, ব্রিজ হয়েছে রাস্তাটিও হবে। আমরা রাস্তাটি নির্মাণে দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করবো।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রকল্প দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের তথ্য মতে ২০১৬-১৭ বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ওই ইউনিয়নের দুওসুও ইউনিয়নের ইজাবউদ্দিন পাড়ায় ২১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৯ টাকা নির্মাণ করা হয় ব্রিজটি।
নীতিমালা অনুযায়ী উন্নয়নের ক্ষেত্রে সরকারের অর্থ সঠিকভাবে কাজে লাগানোর কথা থাকলেও সরকারি দপ্তরের অধিনে অপরিকল্পিতভাবে অবকাঠামো গড়ে তোলায় বছরের পর বছর তা সঠিক কাজে ব্যবহার হচ্ছে না। ফলে মানুষ কাঙ্খিত আশা পূরণ না হওয়ায় উল্টো দোষারোপ করছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও জনপ্রতিনিধিকে। আর সচেতন নাগরিকরা মনে করছেন সরকারি টাকার অংশ ভাগ বাটোয়ারা করতেই এ ধরনের উদ্যোগ নেয় সংশ্লিষ্ট কাজের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা।
বিডি প্রতিদিন/২৭ এপ্রিল ২০১৮/হিমেল