দিনাজপুর এখন অটোরিকশার শহর। অনিয়ন্ত্রিতভাবেই এখানে চলছে প্রায় ১৬-১৭ হাজার অটোরিকশা। এসব যানের কিছু অটোর বৈধতা থাকলেও দিন দিন বেড়ে চলছে অবৈধভাবে চলা অটোর সংখ্যা। প্রতিদিন এই যানটি রাস্তায় নামাতে নিতে হয় না কোন অনুমতি। এর ফলে শত বছরের পুরাতন প্রথম শ্রেণির দিনাজপুর শহরের বিভিন্ন সড়কে যানজট লেগেই থাকে। অটোর নিয়ন্ত্রণে উদাসীন পৌরসভাসহ সংশ্লিষ্ট সবাই।
রাস্তার প্রসারতা কম ও বেহাল দশার উপর দিয়ে অদক্ষ অটো চালকদের বেপরোয়া, ট্রাফিক সিগন্যাল মেনে না চলা, যেখানে-সেখানে যাত্রী উঠানামা করার কারণে একদিকে বাড়ছে যানজট এবং অপরদিকে ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। মেনে চলছে না ট্রাফিক আইন। এখনো বেশিরভাগ অটোতে সন্ধ্যার পর হেড লাইট জলে না। জ্বলে না কোন সিগনাল বাতি। এসব অটো দিনাজপুর পৌরসভার ভাঙ্গা সড়কে চলাচলের সময় যাত্রীরা হয়ে উঠে নাভিশ্বাস। সকাল হওয়ার সাথে বিভিন্ন ইউনিয়ন-উপজেলা থেকে শহরে চালানোর জন্য আসে অটোরিকশা। এসব অটোর কারণে পথচারীদের চলাচলে দুর্ভোগ বাড়ছে।
কিছুদিন আগেও পৌরসভার অনুমতিপ্রাপ্ত নিদিষ্ট সংখ্যক অটো ছাড়া শহরে চলতে দেয়া হয়নি কোন অটোকে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে আবার যে যার মতো চালাচ্ছে বাধা ছাড়াই।
জানা যায়, দিনাজপুর শহরে ছোট-বড় মিলিয়ে ৫০টির মত দোকান রয়েছে। প্রতিদিনই দোকান থেকে কমপক্ষে ৩/৪টি করে অটোরিকশা বিক্রি হয়। রিক্সা শ্রমিক রফিক বলছেন, আমরা পৌর ট্যাক্স দেই। আমাদের মোড়ে নির্দ্ধারিত স্ট্যান্ডগুলো আর নেই। হয় বেদখল নইতো অটোসহ বিভিন্ন যানবাহনের স্ট্যান্ড হয়েছে।
অটো চালক সিরাজুলসহ অনেকে বলেন, মানুষের স্বল্প খরচে এবং স্বল্প সময়ে পৌঁছে দিতে অটো সার্ভিস চালু হয়েছে। অনতিবিলম্বে রেজিস্ট্রেশন ছাড়া শহরে যেন কোন অটো চলতে দেয়া না হয়।
ভোগান্তির শিকার আলী আকবর, আব্বাস উদ্দিনসহ অনেকে বলেন, কয়েক বছর আগেও পায়ে হেটে চলাচল করা যেত। কিন্তু এখন কতিপয় অটো আর রিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহনের চলাচলে পথচারীদের হেটে চলাই বিপদজনক। অদক্ষ অটো চালকদের বেপরোয়া চলাচলে শহরের বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। আর ট্রাফিক আইন অনেকেই জানে না সে আবার কিভাবে মেনে চলবে।
তারা আরো বলেন, বিশেষ করে লিলি মোড়, মডার্ন মোড়, সদর হাসপাতাল মোড়, ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ড, চৌরঙ্গী মোড়, ভুটি বাবুর মোড়, চারুবাবুর মোড়, মালদহপট্রি এলাকায় দিনের কিছু সময় এত যানজটের কবলে পড়ে যে, যান নিয়ে চলাচলই কষ্টকর। সেখানে পথচারীরা নিরূপায়। তবে এসব এলাকার যানজট নিরসনে বিকল্প পরিকল্পনা নিলে হয়তো এটা থেকে সাধারণ মানুষ রেহাই পেত। কিন্তু কে এই পরিকল্পনাটা নিবে। পৌরসভার অবস্থা দেখে মনে হয় তাদের কাজ এটা নয়। নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে পরিকল্পিত ও আধুনিক সড়ক ব্যবস্থাপনায় সড়কে ডিভাইডার নির্মাণ জরুরী।
এদিকে ট্রাফিক ব্যবস্থা ভাল থাকলেও দিনের বেলাতে চলাচলকারী ট্রাক-ট্রাক্টর আটকিয়ে সুবিধা নিতেই ব্যস্ত দেখা যায় তাদের। তাই দিনের বেলায় শহরে চলছে সকল ধরনের ভারি যানবাহন।
এদিকে রেজিষ্ট্রেশন ছাড়া শহরে অটো চলার ব্যাপার এড়িয়ে যান পৌর মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম।
বিডি প্রতিদিন/২৭ এপ্রিল ২০১৮/হিমেল