নীলফামারীর ডোমার, জলঢাকা ও ডিমলা উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড়ে গাছ চাপা পড়ে ও ঘর ভেঙ্গে জলঢাকা ও ডোমারে মা-মেয়েসহ সাত জন ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকের ওই ঘটনায় অন্তত ৫০ ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এ সময় অসংখ্য কাঁচা ঘরবাড়ি ও বড়-ছোট গাছপালা উপড়ে পড়ে। ঝড়ের সাথে শিলা বৃষ্টি ঝড়ায় ক্ষেতে থাকা বোরো ধান, পাট ও ভুট্টার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানান স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসী জানায়, বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে নীলফামারীর ডোমার, ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যায় কালবৈশাখী ঝড়। ২০ মিনিট স্থায়ী ওই ঝড়ের তান্ডবে অসংখ্য কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে, উপড়ে গেছে গাছপালা।
এ সময় ঘর ও গাছ চাপা পড়ে ডোমার উপজেলায় চারজন, জলঢাকা উপজেলায় তিনজন নিহত ও অন্তত ৫০ ব্যক্তি আহত হয়েছেন।
মুষলধারে ঝড়া শিলাবৃষ্টিতে উঠতি বোরো আবাদের পাকা ধান, ক্ষেতে থাকা পাট ও ভুট্টার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
নিহতরা হলেন, জলঢাকা উপজেলার ধর্মপাল ইউনিয়নের খচিমাথা গ্রামের আলম হোসেনের স্ত্রী সুমাইয়া বেগম (৩০) ও তার তিন মাসের কন্যা সন্তান, মীরগঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব শিমুলবাড়ি মমিনূর রহমানের ছেলে ফ্লেক্সিলোড ব্যবসায়ী আশিকুর রহমান (২২)।
ধর্মপাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামিনুর রহমান মা ও মেয়ের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অপরদিকে জলঢাকা থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান তিন জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে ডোমার উপজেলার নিহতরা হলেন, উপজেলার কেতকীবাড়ি ইউনিয়নের বোতলগঞ্জ গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে আবদার আলী (৫০), ভোগডাবুড়ি ইউনিয়নের খানকাশরীফ গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে জামিউল ইসলাম (১২), একই ইউনিয়নের শাখারীপাড়া গ্রামের শুকারু মামুদের স্ত্রী খদেজা বেগম (৫৫), গোমনাতি ইউনিয়নের চৌরঙ্গী বাজার গ্রামের ধৌলু মামুদের ছেলে আব্দুল গণি (৪০)। ডোমার থানার উপ-পরিদর্শক আরমান আলী উপজেলায় চার জন নিহতের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আবুল কাশেম আযাদ জানান, বৃহস্পতিবার রাতে নীলফামারীর তিন উপজেলা জলঢাকা, ডোমার ও ডিমলায় কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে বোরো ধান, পাট, ভুট্টা ও বাদামের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মাঠপর্যায়ে আমাদের কর্মকর্তাগণ ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নিরুপনের কাজ চলছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালেদ রহীম বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে নীলফামারীর ডোমার, জলঢাকা ও ডিমলা উপজেলার উপড় দিয়ে কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যায়। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ সময় গাছচাপায় জলঢাকা ও ডোমার উপজেলায় সাতজন নিহত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন শেষে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তালিকা প্রনয়ণ শেষে ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/ ১১ মে ২০১৮/ ওয়াসিফ