নীলফামারীর ডিমলা সদর ইউনিয়নের রামডাঙ্গা গ্রামের কৃষক জাফর আলী (৩৪)। আর ক’দিন পরে ক্ষেত থেকে ঘরে তুলবেন ধান। এজন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। কিন্ত হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড় স্বপ্ন নষ্ট করে দিয়েছে তার।
জাফর আলী জানান, ৫ বিঘা জমিতে ধান, আর মরিচ ও ভুট্টাসহ আবাদ করেছি ২০ বিঘা জমিতে। সব মাটির সাথে মিশে গেছে। ধার কর্য করে ফসল ফলিয়েছি এখন কি হবে বুঝতে পারছি না।
শুধু জাফর নন নীলফামারী জেলার ডোমার, ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার হাজার হাজার কৃষকের চোখে মুখে নেমে এসেছে অন্ধকার। বৃহস্পতিবার রাতে কালবৈশাখীর থাবায় মাটিতে মিশে গেছে উঠতি বোরো, ভুট্টা, মরিচসহ বিভিন্ন ফসল।
জলঢাকা উপজেলার ধর্মপাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জামিয়ার রহমান জানান, ইউনিয়নের বেশিরভার এলাকা বৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কাঁচা ঘর বাড়ি, বিদ্যুতের খুটি, অসংখ্য গাছপালা উপড়ে পড়েছে রাস্তায়। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত বন্ধ থাকে যান চলাচল। রাস্তা পরিচ্ছন্নতায় নামে ফায়ার সার্ভিস।
পাঙ্গা মটকপুর ইউনিয়নের মটকপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল হোসেন জানান, চার বিঘা জমিতে মরিচ আবাদ করেছেন। ঝড়ের তাণ্ডবে মরিচ গাছ মাটিতে মিশে গেছে। নষ্ট হয়ে পড়েছে ৩ বিঘা ভুট্টার ক্ষেত। ঋণ নিয়ে আবাদ করলেও ওই টাকা পরিশোধ করা এখন তার কাছে অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মীরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হুকুম আলী জানান, ঘটনার সময় অঝড়ে শিলা বৃষ্টির সাথে কালবৈশাখীর থাবায় নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে জনপদ। মুহূর্তের মধ্যে আহাজারি শুরু হয় মানুষদের মধ্যে। বসত হারানো মানুষগুলো যেন অসহায় পড়েছেন। তিনি বলেন, প্রাথমিক ভাবে আমরা ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা প্রণয়ন করছি।
এদিকে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালেদ রহীম। তিনি বলেন, ঝড়ে নিহতদের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থদেরও সহযোগীতা করা হবে। এজন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/১১ মে ২০১৮/হিমেল