কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার বিপুলাসার উত্তর বাজার এলাকায় শিশু মো. নোমান হোসেনকে (৫) বেত দিয়ে পিটিয়ে ও শরীরে গরম পানি ঢেলে নির্যাতনকরা সেই মাদ্রাসা শিক্ষক এমদাদ হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উপজেলার লক্ষণপুর ইউনিয়নের মান্দুয়ারায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
শুক্রবার মনোহরগঞ্জ থানার নাথেরপেটুয়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক জামির হোসেন জিয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নির্যাতিত নোমান উপজেলার বিপুলাসার ইউনিয়নের ছোট কাঁচি গ্রামের ভ্যানচালক খোরশেদ আলমের ছেলে।
নাথেরপেটুয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জামির হোসেন জিয়া জানান, শিশু নোমানকে নির্যাতনের ঘটনায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোন মামলা দায়ের করা হয়নি। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনায় মনোহরগঞ্জ থানা পুলিশের পক্ষে নাথেরপেটুয়া তদন্ত কেন্দ্রের সহকারী উপ-পরিদর্শক আশ্রাফুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই শিক্ষককে অভিযুক্ত করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে ওইদিন রাতে শিক্ষক এমদাদের নিজ গ্রাম উপজেলার লক্ষণপুর ইউনিয়নের মান্দুয়ারায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
উল্লেখ্য, উপজেলার লক্ষণপুর ইউনিয়নের মান্দুয়ারা গ্রামের বাসিন্দা এমদাদ হোসেন উপজেলার বিপুলাসার উত্তর বাজার এলাকার আবু তাহেরের একতলা বাড়িটি ভাড়া করে সেখানে মোহাম্মদীয়া হাফেজীয়া মাদ্রাসা নামে একটি মাদ্রসার কার্যক্রম শুরু করেন। তিনি নিজেও ওই বাড়িতে বসবাস করতেন। বর্তমানে ১১ জন শিশু শিক্ষার্থীর বিপরীতে এমদাদ হোসেন একাই পরিচালনা করছেন প্রতিষ্ঠানটি। গত কয়েক মাস আগে শিক্ষক এমদাদ শিশু নোমানকে ভালভাবে পাঠ দেওয়ার কথা বলে আবাসিকভাবে নিজের কাছে রেখে দেন।
গত কয়েকদিন ধরে শিশুটির বাবা-মা তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে শিক্ষক এমদাদ বিভিন্ন কথা বলে তাদের সাথে শিশুটির দেখা না করিয়ে ফিরিয়ে দেন। এতে শিশুটির বাবা-মায়ের মনে সন্দেহ হলে তারা গত ৮মে জোর করে শিশু নোমানের সঙ্গে দেখা করতে যান। তারপর শিশুটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে বেতের আঘাতের দাগ দেখতে পান তারা। এছাড়া শিশুটির চোখ-মুখেও নির্যাতনের দাগ দেখেন তাঁরা। পরে শিশুটি তার পরিবারসহ স্থানীয়দের জানায়, অন্যান্য নির্যাতনের পাশাপাশি শিক্ষক এমদাদ তার গোপনাঙ্গে ও শরীরে গরম পানি ঢেলে নির্যাতন করেছে। বিষয়টি জানাজানি হলে শিশুটির পরিবারকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চেষ্টা চালান শিক্ষক এমদাদ।
বিডি প্রতিদিন/১১ মে ২০১৮/হিমেল