সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরের ব্রাহ্মণ গ্রাম থেকে পাঁচিল পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে শুরু হয়েছে যমুনা নদী ভাঙ্গন। মাত্র এক সপ্তাহে অর্ধশতাধিক বসতভিটা ও শতাধিক হেক্টর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আতঙ্কে রয়েছে নদী তীরের মানুষ।
এলাকাবাসী বলছে, বর্ষার আগে ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে বর্ষা মৌসুমে বেশ কয়েকটি গ্রাম, ফসলি জমি, মসজিদ, মাদ্রসা, থানা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বৃহত্তর এনায়েতপুর কাপড়ের হাটসহ বহু স্থাপনা বিলীন হয়ে যাবার আশঙ্কা রয়েছে।
জানা যায়, কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলের কারণে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর পশ্চিম তীরবর্তী এনায়েতপুরের ৬ কিলোমিটার জুড়ে শুরু হয় ভাঙ্গন। অব্যাহত ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বসতভিটা-ফসলী জমি-গাছপালা। ঘরবাড়ি হারিয়ে বাস্তুহারা হয়ে পড়ছে মানুষ। খোলা আকাশে মানবেতর জীবনযাপন করছে অনেকে। রাতের বেলায় ভাঙ্গনের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে নদী তীরবর্তীদের। বিলীনের আশঙ্কায় ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে অনেকে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বেশির ভাগ সময় রাতের দিকে ভাঙ্গন শুরু হয়। ভাঙ্গনের তীব্রতা এতো হয় যে, ঘরবাড়ির সরিয়ে নেয়ার সময় থাকে না। মঙ্গলবার রাত ১০ থেকে ভোর চারটা পর্যন্ত প্রায় ৬০টি বসতভিটা বিলীন হয়ে গেছে। জায়গা না থাকায় অনেকে চর এলাকায়, অনেকে খোলা আকাশের নীচে দিনযাপন করছে।
স্থানীয় আবির, জাহাঙ্গীর আব্দুল লতিফসহ অনেকের অভিযোগ, ভাঙ্গন শুরু হলেও প্রতিরোধে নেয়া হচ্ছে না কোন ব্যবস্থা। মন্ত্রী- এমপিসহ পাউবো কর্মকর্তারা পরিদর্শন করে বার বার শুধু আশ্বাসই দিয়ে যাচ্ছে কিন্তু নিচ্ছেন না কোন কার্যকরী ব্যবস্থা।
এ অবস্থায় বর্ষার আগে ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে ব্রাহ্মণ গ্রামসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রাম, ফসলী জমি, হাট-বাজার, থানা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অসংখ্য স্থাপনা বিলীনের আশঙ্কা রয়েছে। আর এ জন্য ভাঙ্গন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণে দাবি জানিয়েছেন তারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, বালি ভর্তি জিওব্যাগ ফেলে আপাতত ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। আর স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। এজন্য বিভিন্ন ধাপে ধাপে এগুতো হয়। তবে ইতোমধ্যে কারিগরী টিম ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন শেষে রিপোর্ট জমা দিয়েছে। এটি অনুমোদনের পর প্রকল্প প্রস্তাবনা জমা দেয়া হবে। আর প্রকল্প প্রস্তাবনা অনুমোদন হলে টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ শুরু করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন