নেত্রকোনার পাহাড়ি অঞ্চলে সেচ সুবিধার জন্য এবং হাতির আক্রমণ থেকে ধান রক্ষায় এবার আগেভাগেই আগাম জাতের আমন আবাদ করেছে নেত্রকোনার পাহাড়ি অঞ্চলের কৃষকেরা। এতে করে শঙ্কাহীনভাবে ফসল ঘরে তুলতে পারার পাশাপাশি একই জমিতে আবাদ করতে পারবে অন্যান্য রবিশস্যও। সেইসাথে পাহাড় থেকে নেমে আসা হাতির আক্রমণ থেকেও ধান রক্ষা হবে। যে কারণে প্রখর রোদেও ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলার দুর্গাপুর করমাকান্দার পাহাড়ি এলাকার কৃষকেরা। কৃষি বিভাগও বলছে রোপা আমনের স্বল্প জীবনকালীন জাতের ধান আবাদের ওপর জোর দেয়া হয়েছে। এরপরপরই রবিশস্য আবাদ করা যাবে। এতে ফলন হবে তিনগুন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, নেত্রকোনার পাহাড়ি সীমান্ত উপজেলা দুর্গাপুর কলমাকান্দায় সর্বত্র শুরু হয়েছে আগেভাগে রোপা আমন চাষাবাদ। সীমান্ত ধরে দুর্গাপুরের গোপালপুর, লক্ষ্মীপুর, বারোমারি হয়ে কলমাকান্দার নাজিরপুর, লেঙ্গুরা বউ বাজার সীমান্তসহ প্রতিটি সীমান্ত গ্রামের আদিবাসী বাঙ্গালিসহ সকল জাতিগোষ্ঠীর কৃষকরা পুরোদমে চাষাবাদ শুরু করেছেন।
প্রখর রোদ উপেক্ষা করেই অনেকে পরিবার পরিজন নিয়ে দ্রুত চারা লাগাচ্ছেন। ঢলের পানিতে ক্ষতির আশঙ্কা এবং হাতির আক্রমণে অনেকে শঙ্কায় থাকেন। তারপরও দিনে দিনে পাহাড়ের ফলন কিছুটা ভালোর দিকে থাকায় কম সময়ের ফসল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকরা। রোপা আমন চাষের পরেই বিভিন্ন রবিশস্য চাষ হয় পাহাড়ি এই জনপদে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং হাতির আক্রমণ থেকে বাঁচতে সরকারিভাবে উদ্যোগ নেয়ার দাবি কৃষকদের।
কৃষি বিভাগ জানায়, এবার জেলায় রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। ১ লক্ষ ৩৫ হাজার ৯শত হেক্টর। বুধবার (২৭ আগস্ট) পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে ১ লক্ষ ৬ হাজার ১৬৫ হেক্টর জমি। তারমধ্যে দুর্গাপুর আবাদের লক্ষমাত্রা ১৬ হাজার ৪২০ হেক্টরের মধ্যে ১৬ হাজার ৭০ হেক্টর অর্জিত। কলমাকান্দা উপজেলায় ১৫ হাজার ২০০ হেক্টর আবাদের লক্ষ্যমাত্রায় বুধবার পর্যন্ত ১৪ হাজার ৭০০ হেক্টর অর্জিত হয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, কৃষকদের বিনা ধান ১৭,১৮ জাতের স্বল্প জীবনকালীন ধান আবাদে উদ্বুদ্ধ করছেন। যাতে করে আগাম রোপা আমন করে অন্যান্য ফসল আবাদ করতে পারেন। এতে করে রবিশস্যের আবাদ বাড়ছে। যেমন সরিষা এখন তিনগুণ আবাদ হয়। এবার জেলায় সরিষা আবাদের টার্গেটও রয়েছে ১৫ হাজার হেক্টর।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল