দুর্যোগে মানব সেবার দৃষ্টান্ত দেখালেন এক বৃক্ষপ্রেমী আব্দুল হামিদ। সম্প্রতি নেত্রকোনা শহরে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়ে যখন বিধ্বস্ত তখন চারদিকে শুরু হয় খাবার পানির সংকট। আর এ সংকটে মানুষের পাশে ভ্যানগাড়িতে করে পানি নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে যান তিনি। বিনামূল্যে বিতরণ করেন খাবার পানি।
গত ১১ মে সকাল পৌনে ৭ টার দিকে নেত্রকোনা সদর উপজেলা, পূর্বধলা ও আটপাড়া উপজেলার উপর দিয়ে প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় বয়ে যায়। ঘর চাপায় আমতলায় আব্দুল মালেক নামে এক কৃষক নিহত ও শিশুসহ অন্তত দেড় শতাধিক নারী-পুরুষ আহত হন। অসংখ্য গাছপালা, বিদ্যুতের খুঁটি, তার, কাঁচা বাড়ি ঘর লন্ডভন্ড হয়। ফসলেরও ক্ষতি হয়। বন্ধ হয়ে যায় ইন্টারনেট যোগাযোগ। তৃষ্ণার্ত লোকজন বাধ্য হয়েই নদী নালা, খাল, বিল ও ডোবার পানি সংগ্রহ করেন দৈনন্দিন কাজ করতে। পাানির অভাবে স্টল, খাবার হোটেল রেস্তোরা, বিদ্যুতের অভাবে ব্যাটারি চালিত রিকসা ও ইজিবাইক বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময় গোটা নেত্রকোনা যেন সারা দেশ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন জনপদে পরিণত হয়। বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটের অভাবে এই দুর্যোগের সংবাদ কোন গণমাধ্যমে তুলে ধরা সম্ভব না হওয়ায় প্রশাসনও এই ব্যাপারে তড়িৎ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি।
আর এই ভয়াবহ অবস্থায় নিজের পরিচয় গোপন রেখে একাধিক কন্টিনারে ভর্তি ভ্যানগাড়ি চালিয়ে জেলা শহরের অলিগলিতে বিনা মূল্যে পানি বিলিয়ে এক অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন আব্দুল হামিদ নামে এক বৃক্ষ প্রেমিক। ঢাকঢোল পিটিয়ে মানব সেবার নামে যারা নিজেদের প্রচারে ব্যস্ত হয়ে পড়েন কিন্তু এই দুর্যোগকালে তাদের দেখা না গেলেও সত্যিকারের নিঃস্বার্থ প্রচার বিমুখ মানব দরদী আব্দুল হামিদ বিবেকবান অনেকের চক্ষু খুলে দিয়েছেন। তাই বৃক্ষ প্রেমিক আব্দুল হামিদকে নিয়ে এখনো লোকজন আলোচনায় মুখরিত। নিঃস্বার্থভাবে আব্দুল হামিদের মত যদি সবাই একে অপরের বিপদে এগিয়ে আসতেন তবে আমাদের সমাজ ব্যবস্থা এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যেত বলে অনেকে মন্তব্য করেন।
বিডি-প্রতিদিন/ ই-জাহান
