নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সিদ্ধিরগঞ্জে মা ও দুই মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে প্রধান পরিকল্পনাকারী সতীন শোভা আক্তার (৩২)।
বুধবার (২৭ জুন) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমামের আদালতে গ্রেফতারকৃত শোভা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রাসেল আহামেদ এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ২৪ জুন কিলিং মিশনে থাকা গ্রেফতারকৃত সবুজ ওরফে সোহেল একই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এছাড়া গ্রেফতারকৃত ঘাতক স্বামী মাসুদ দেওয়ানকে ইতোমধ্যে পুলিশ ৩ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শরফুদ্দিন জানান, গোপন সংবাদ ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব এলাকার বোনের বাসা থেকে শোভাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই ঘটনায় নিহতরা হলো মাসুদের স্ত্রী নোয়াখালীর সেনবাগের পদুয়া এলাকার আঞ্জুবী আক্তার (২৮) ও তার দুই মেয়ে ৭ বছর বয়সী মাঈদা আক্তার ও ১৫ মাস বয়সী মাহি।
জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জের আটি হাউসিং মসজিদ গলির কবির মিয়ার বাড়ির ৬ তলার পশ্চিম দক্ষিণ ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেয় মাসুদ দেওয়ান। সে তার প্রথম স্ত্রী আঞ্জুবী আক্তারের অমতে তারই বান্ধবী শোভা আক্তারকে বিয়ে করে। এই বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগেই ছিল। ওই ঝগড়ার জের ধরে সে তার দ্বিতীয় স্ত্রী শোভা আক্তার ও চাচাতো শ্যালক সবুজ ওরফে সোহেলকে সঙ্গে নিয়ে প্রথম স্ত্রী আঞ্জুবী আক্তারকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ওই পরিকল্পনা মোতাবেক গত ৯ জুন তার দ্বিতীয় স্ত্রী ও চাচাতো শ্যালক মিলে প্রথমে আঞ্জুবী আক্তারকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে বড় মেয়ে মাঈদা ও ছোট মেয়ে মাহিকেও শ্বাসরোধে হত্যা করে। এরপর তাদের লাশ বস্তায় ফেলে সিদ্ধিরগঞ্জের একটি নির্জন স্থানে ও একটি পুকুরে ফেলে দেয়া হয়। গত ১১ জুন বিকাল ৫টায় সিদ্ধিরগঞ্জের ভাঙ্গারপুল এলাকার ডিএনডি ইরিগেশন খালের পাশ থেকে ড্রামের মধ্যে আঞ্জুবী আক্তারের (২৮) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর গত ১৬ জুন ঈদের দিন আটি হাউজিংয়ের আলী মোহাম্মদের মাছের খামারে ভাসতে থাকা বস্তাবন্দী অবস্থায় ১৫ মাস বয়সী শিশু মাহির লাশ উদ্ধার করা হয়। ১৮ জুন আটি এলাকার একই খামারে ভাসতে থাকা একটি ব্যাগ থেকে হাত পা বাঁধা অবস্থায় শিশু মাহিদার (৭) লাশ উদ্ধার করা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন