বাংলাদেশ সরকার, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও ইউএনডিপি বাংলাদেশের আর্থিক সহায়তায় স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (পর্যায়-২) প্রকল্পের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় জেলা প্রশাসন, নোয়াখালী কর্তৃক আয়োজিত গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে ‘স্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের ভূমিকা’ শীর্ষক দিনব্যাপি কর্মশালা আজ নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক, মো. মাহবুব আলম তালুকদার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উক্ত কর্মশালার উদ্বোধন করেন। কর্মশালায় জেলা পর্যায়ে কর্মরত সরকারি ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) সমূহ তাদের নিজস্ব আউটরিচ কার্যক্রমের মাধ্যমে গ্রামীণ জনগণের মাঝে গ্রাম আদালত বিষয়ক সচেতনতা বাড়ানো ও বিচারিক সেবা নিতে উৎসাহিত করার জন্য কীভাবে গ্রাম আদালতের সেবা সম্পর্কে তথ্য প্রদান করা যায় তা চিহ্নিত করা এবং তাদের সঙ্গে নেটওয়ার্ক তৈরি করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়া গ্রামীণ জনগণের কাছে গ্রাম আদালত বিষয়ক সচেতনতা বাড়ানো এবং তাদেরকে বিচারিক সেবা নিতে উৎসাহিত করতে সক্ষম এনজিওদের চিহ্নিত করা এবং তাদের সঙ্গে নেটওয়ার্ক তৈরি করা বিষয়ে আলোচনা করা হয়। বৃহত্তর গ্রামীণ জনগণের স্বার্থে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ যাতে কার্যকরভাবে গ্রাম আদালত সম্পর্কে তথ্য প্রদান এবং বিচারিক সেবা নিতে উৎসাহ দেয়া অব্যাহত রাখার জন্য ভবিষ্যতে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে প্রশাসনের বিভিন্ন সভায় গ্রাম আদালত সম্পর্কিত এজেন্ডা অন্তর্ভুক্ত করা, সংস্থাসমূহের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডের ফলো-আপ ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
উপপরিচালক, স্থানীয় সরকার, নোয়াখালী মো. মাসুদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্তিত ছিলেন পুলিশ সুপার মো: ইলিয়াছ শরীফ। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (পর্যায়-২) প্রকল্পের ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর, উজ্জ্বল কুমার দাস চৌধুরী বক্তব্য দেন। জেলা প্রশাসক তার বক্তৃতায় গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহকে জোড়ালো ভূমিকা রাখতে আহবান জানান। তিনি এ কর্মশালা আয়োজনে সহায়তা করার জন্য বাংলাদেশ সরকার, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও ইউএনডিপি বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মাহমুদা খাতুন এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর, উজ্জ্বল কুমার দাস চৌধুরী পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে গ্রাম আদালতের চলমান কার্যক্রম এবং প্রচার বিষয়ক (আউটরিচ) পরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিত করেন।
বাংলাদেশ সরকার, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন এবং ইউএনডিপি-এর অর্থায়নে বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (২য় পর্যায়) প্রকল্প বাংলাদেশের দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর বিচারিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্য দেশের ২৭টি জেলার ১,০৮০টি ইউনিয়নে কাজ করছে। এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হচ্ছে- স্থানীয়ভাবে সহজে, কম খরচে এবং দ্রুত স্থানীয় বিরোধ নিষ্পত্তি, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বিশেষ করে নারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা, জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো এবং উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে কর্মরত বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা নিশ্চিত করা।
অনুষ্ঠানে ৩৫টি সরকারি দপ্তর ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন। কর্মশালায় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ গ্রাম আদালত বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য একটি কার্যকর পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার