নাটোরে লিচু ফুলের মধু সবচেয়ে বেশি আহরণ করা হয় গুরুদাসপুর থেকে। এ বছর উপজেলাটির ২০০টি লিচু বাগান থেকে মধু সংগ্রহ করছেন মৌসুমি মৌচাষীরা। জেলায় এর বাইরে সিংড়ার কিছু লিচু বাগানে মধু সংগ্রহ চলছে। কৃষি বিভাগ বলছে, এবার নাটোরে অন্তত ১২ টন লিচু ফুলের মধু সংগ্রহের সম্ভাবনা রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নাটোরের সাত উপজেলার মধ্যে গুরুদাসপুর ও সিংড়ায় বাণিজ্যিকভাবে লিচু চাষ হয়। এর মধ্যে গুরুদাসপুরে লিচু বাগানের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এরই মধ্যে গুরুদাসপুর সদর, বিয়াঘাট, চাপিলা, নাজিরপুরসহ উপজেলার প্রায় সব বাগানে ফুল এসেছে। সমাগম ঘটেছে প্রচুর মৌমাছির। এ সুযোগে বাগানে বাক্স বসিয়ে মধু আহরণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন মৌসুমি মৌচাষীরা।
সাতক্ষীরা, সিরাজগঞ্জ, ময়মনসিংহ, পাবনাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মৌচাষীরা জানান, বাগানে তারা ছোট ও বড় দুই ধরনের কাঠের বাক্স স্থাপন করেছেন। প্রতিটি বাক্সে একটি করে রানী মৌমাছি ও অসংখ্য কর্মী মৌমাছি রয়েছে।
সিরাজগঞ্জ থেকে আসা সিরাজ শেখ বলেন, নভেম্বর-ডিসেম্বর থেকে তারা সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহ করেন। সরিষা ফুলের মৌসুম শেষ হলে তারা লিচু বাগানে আসেন।
আরেক মৌসুমি মৌচাষী হোসেন আলী বলেন, লিচু গাছে সাধারণত জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে ফুল আসা শুরু করে। এরপর পরই আমরা মৌ-বাক্সগুলো স্থাপন করি। বাগান মালিকরাও টাকা ছাড়াই বাক্স স্থাপনের অনুমতি দেন। কারণ মৌমাছির কারণে পরাগায়ণ ভালো হয়। পরাগায়ণ ভালো হলে বাগানে ফলও ধরে প্রচুর।
মৌচাষীরা জানান, ডাবর, এপি, হামদার্দসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে সংগৃহীত মধু বিক্রি করেন। পাইকারি হিসেবে প্রতি কেজি বিক্রি করেন ৫৫-৬০ টাকা দরে।
গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আব্দুল করিম বলেন, এ উপজেলায় ৪১০ হেক্টর বাগানে এবার লিচু চাষ হচ্ছে। বাগানগুলোয় আট হাজার মৌ-বাক্স স্থাপন করা হয়েছে। আমরা এবার এখান থেকে ১০-১২ টন মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি।
এদিকে সিংড়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এ উপজেলায় ১০০ হেক্টর বাগানে লিচু চাষ হচ্ছে। এখানে এ পর্যন্ত ১২টি স্থানে ১ হাজার ৬০০ মৌ-বাক্স স্থাপন করা হয়েছে, যা থেকে মধু আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে দেড় টন।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ তাফসীর