২৬ মে, ২০১৯ ১৬:০৪

৬শ’ বছরের ইতিহাসের সাক্ষী মসজিদের সংস্কার জরুরি

রাহাত খান, বরিশাল

৬শ’ বছরের ইতিহাসের সাক্ষী মসজিদের সংস্কার জরুরি

বরিশাল সদর উপজেলার রায়পাশা কড়াপুর ইউনিয়নের কড়াপুর ‘মিয়া বাড়ি জামে মসজিদ’ প্রায় ৬শ’ বছরের ইতিহাসের সাক্ষী। মসজিদটি ঠিক কবে কে নির্মাণ করেছিলেন, তার প্রকৃত কোন ইতিহাস জানেন না কেউ। তবে মিয়া বাড়ির ৬ পুরুষ আগের জনৈক মাহমুদ হায়াত তার আমলে এই মসজিদের সংস্কার করেন। এরপর বংশানুক্রমে পরবর্তী বংশধররা সংস্কার করে টিকিয়ে রেখেছেন ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদ।

কোন ধরনের রড সিমেন্ট ছাড়াই, চুন-সুরকি আর বিশেষ ইট (পাতলা) ইট দিয়ে নির্মিত দোতালা এই মসজিদে ৩টি বড় গম্ভুজ এবং ১০টি মিনার রয়েছে।

খাড়াভাবে নির্মিত মসজিদের সিড়িটি ঐতিহাসিক আমলের কথা মনে করিয়ে দেয়। মসজিদের প্রতিটি দেয়াল ৩ ফিটেরও বেশি চওড়া। সিড়ির নিচে অন্তত ৫শ’ বছর আগের দুটো কবর রয়েছে। 

মিয়া বাড়ির প্রবীণ ব্যক্তিদের মতে, এই মসজিদের প্রথম সংস্কারক মাহমুদ হায়াতের পরবর্তী বংশধর (মিয়া বাড়ির দ্বিতীয় প্রজন্ম) মাহমুদ জায়েদ এবং তার সহধর্মীনিকে মসজিদের সিড়ির নীচে বিশেষভাবে চির শায়িত করা হয়েছে। সব সময় মুুসুল্লীদের চলাচল হবে ভেবে নাজাতের উদ্দেশ্যেই সিড়ির নিচে তাদের দাফন করা হয় মনে করছেন ওই বংশের লোকজন।

জুমার দিনে দ্বিতীয় তলার ভেতর ছাড়িয়ে বাইরেও মুসুল্লী সমাগম হয়। দ্বিতীয় তলায় বড় ৩টি গম্ভুজ থাকায় এর ভেতরটা খুবই ঠান্ডা। ২৫ বছর ধরে এই মসজিদে ইমামতিত্ব করা মাওলানা মো. মহিউদ্দিন বলেন, ইমামতি করে তেমন বেশি সন্মানী না পেলেও এখানে নামাজ আদায় করে বা করিয়ে মনে তৃপ্তি পান তিনি।

মসজিদের নিচ তলায় ৯টি সু-পরিসর কক্ষ রয়েছে। এই কক্ষগুলোতে আগে দূরদূরান্তের মুসাফিররা কিছুদিন অবস্থান করতেন। এছাড়া পাশেই থাকা মাদ্রাসার অনেক শিক্ষার্থীও ওই কক্ষগুলোতে অবস্থান করেন। মসজিদের ৬টি দরজা এবং জানালার উপরে ঐতিহাসিক আমলের দৃষ্টিনন্দন কারুকাজ চোখে পড়ে। দোতালার ভেতরের অংশের গম্বুজগুলোর কারুকাজও ঐতিহাসিক আমলের কথা মনে করিয়ে দেয়।

স্থানীয়দের মতে মোঘল আমলে এই মসজিদটি নির্মিত হয়। ঐতিহাসিক নিদর্শন হওয়ায় ১৯৯০ সালে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণে চলে যায় মসজিদটি। ওই সময় প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর থেকে এক লাখ টাকার মতো অনুদান দেয়া হলেও তাতে তেমন কোন সংস্কার কাজ করা সম্ভব হয়নি জানান মিয়া বাড়ির ৬ষ্ঠ বংশধর আবু লায়েছ ইয়াহিয়া।

মিয়া বাড়ির মো. মিজানুর রহমান মিয়া জানান, মসজিদের নির্মাণ শৈলী বলে দেয় এটা মোঘল আমলে নির্মিত। মিয়া বাড়ির বংশধররা সংষ্কার করে ঐহিত্যবাহী এই মসজিদটি টিকিয়ে রেখেছেন। এখনই জরুরি সংস্কার দরকার বলে তিনি মনে করেন।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর