নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলায় এক সপ্তাহের ব্যবধানে তিন তিনটি গণধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। দু'টি ঘটনায় পুলিশ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে। অন্যটির মামলা নিয়ে গড়িমশি চলছে। এসব ঘটনায় এলাকাবাসীর মাঝে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
নারী সংগঠনসহ সমাজকর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা। পুলিশ বলছে, তারা খবর পেয়েই তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন। কিছু আসামি গ্রেফতারও করেছেন।
এদিকে, গত ছয় জুন থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত তিনটি চাঞ্চল্যকর ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক মানুষ আহত হয়।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার মধ্যরাতে কেন্দুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক কিশোরীকে অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া যায়। কিশোরীটি উপজেলার চিরাং ইউনিয়নের দুল্লি গ্রামের।
কিশোরীর পরিবার জানায়, অটোচালক ইকবালের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠলে ঈদের পরদিন (৬ জুন) অটোতে করে ঘুরতে বের হয়। পরে হাওরের পরিত্যক্ত একটি মেশিন ঘরে আটকে রেখে বন্ধুবান্ধবসহ ধর্ষণ করে। এরপর বুধবার (১২ জুন) গোগবাজার জামতলা এলাকায় ফেলে রেখে যায়। অজ্ঞান অবস্থায় পথচারীরা সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে আদমপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেখে আসে।
এদিকে, ১১ জুন গড়াডোবা ইউনিয়নের আউজহাটি শিবপুর গ্রামের এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কিশোরী ফুফুরবাড়ি থেকে নিজ ফেরার পথে গণধর্ষণের শিকার হয়। এর আগে (৬ জুন) ঈদে বাড়ি এসে এক গার্মেন্টস কর্মী কথিত স্বামীর সাথে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। পুলিশ দুটি ঘটনায় মোট ছয় জনকে গ্রেফতার দেখালেও পোশাক কর্মী ধর্ষণের মূল আসামি কথিত স্বামী আটক হয়নি। এছাড়াও কেন্দুয়ায় ঈদের নামাজসহ বিভিন্ন তুচ্ছ ঘটনায় গ্রামবাসীসহ একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় শতাধিক আহত হয়।
এ ব্যাপারে জেলা নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও লিগ্যাল এইড অ্যাডভোকেট দিলোয়ারা বেগম বলেন, আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়া এবং আসামির সাথে বাদীকে সমঝোতা করিয়ে দেয়ায় এ সকল ঘটনা ঘটেই চলেছে। মেডিকেলে গিয়েও হয়রানির শিকার হতে হয়। মেডিকেল এজাহার, এসবের মারপ্যাচে ভিকটিম এক সময় বিচারে বিমুখ হওয়ায় শেষ পর্যন্ত আসামির বিচার হয় না। ফলে এ সকল ঘটনা বেড়েই চলেছে।
কেন্দুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামানের কাছে পরপরই একই ঘটনার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, আমরা কি করবো ভাই বলেন? আমরা তো এলাকায় এলাকায় গণসংযোগ করছি। আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থাও নিচ্ছি।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার