১৯ জুন, ২০১৯ ০৬:১৪

তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে চীনা-বাঙালি-পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষ, ভাঙচুর-লুটপাট

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে চীনা-বাঙালি-পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষ, ভাঙচুর-লুটপাট

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে এক বাঙালি শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে চীনা-বাঙালি ও পুলিশের মধ্যে দফায় দফায় ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। 

মঙ্গলবার বিকেলের পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এই ত্রিমুখি সংঘর্ষে তিন পুলিশ সদস্য, সাত চীনা নাগরিক এবং বাঙালিসহ অসংখ্য আহত হয়েছে। এর মধ্যে সাতজন চীনা নাগরিক এবং একজন বাঙালিসহ ৮ জনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

এসময় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অভ্যন্তরে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। হামলার হাত থেকে রক্ষা পায়নি পুলিশের পিকআপ এবং মোটরসাইকেল। এ নিয়ে ঐ এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল সংখ্যক পুলিশ। 

পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকালের দিকে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্রয়লারের উপর (প্রায় সাত তলার সমান উচু) থেকে পড়ে এক বাঙালি শ্রমিকের মৃত্যু হয়। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্মরত চীনাদের দাবি, ঐ শ্রমিক অসাবধানতাবশত নিচে পড়ে গিয়ে মারা যায়। তবে বাঙালী শ্রমিকরা অভিযোগ করেছেন, ব্রয়লারের উপর থেকে ঐ শ্রমিককে এক চীনা নাগরিক লাথি দিয়ে নীচে ফেলে দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই সে নিহত হয়। এ ঘটনার পর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অভ্যন্তরে নিহত শ্রমিকের লাশ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে অন্যান্য বাঙালি শ্রমিকরা। খবর পেয়ে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে। 

এ ঘটনার পর দিনভর চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। এর জের ধরে শেষ বিকেলে বাঙালি শ্রমিকদের সাথে চীনাদের সংঘর্ষ হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে দফায় দফায় ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। এসময় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অভ্যন্তরে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় বাঙালিরা। তারা ব্যাপক ভাঙচুর এবং মূল্যবান মালামাল লুটপাট করে বলে অভিযোগ রয়েছে। ভাঙচুরের হাত থেকে রক্ষা পায়নি পুলিশের যানবাহনও। 

দফায় দফায় সংঘর্ষে তিন পুলিশ এবং সাত চীনা নাগরিকসহ অসংখ্য আহত হয়। তাদের মধ্য থেকে সাত চীনা এবং এক বাঙালিসহ ৮ জনকে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাতেই শের-ই-বাংলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চীনা ও বাঙালিদের দেখতে আসেন পটুয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. হেমায়েত উদ্দিন।

এদিকে সংঘর্ষের পর কলাপাড়ায় থমথমে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ফের সংঘাতের আশংকায় মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ। কলাপাাড়া থানার ওসি মনির হোসেন টেলিফোনে এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে এঘটনায় যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।

 

বিডি-প্রতিদিন/ তাফসীর আব্দুল্লাহ/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর