জমিজমা বিরোধের জের ধরে পটুয়াখালীর দশমিনায় হিন্দু পরিবারের ৮ জনকে পিটিয়ে জখম করেছে প্রতিপক্ষ। আজ সোমবার সকালে এ ঘটনায় জড়িত থাকায় ঠাকুরের হাট এলাকা থেকে জহির সিকদার ও আলম মৃধাকে আটক করেছে দশমিনা থানা পুলিশ।
হামলাকারিদের হাত থেকে রেহাই পায়নি চার মাসের অন্তঃস্বত্বা অঞ্জনা রানী (২৫)। আহতদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় লক্ষ্মী রানী (৪৫), পুত্রবধূ অঞ্জনা রানী (২৫) এবং অঞ্জুর স্বামী খোকন চন্দ্র মজুমদারকে বরিশাল শেবাচিমে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের দশমিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল রবিবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার বেতাগী সানকিপুর ইউনিয়নের ঠাকুরের হাট বাজারে ওই হামলা চালানো হয়। স্থানীয়রা ও হামলায় আহতরা জানায়, ঠাকুরের হাট বাজারের রাস্তার উত্তর পাশে প্রতিদিনের মত ক্ষিতিষ মজুমদার তার চা-পানের দোকানে কাজ করছিলেন। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ওই দোকানসহ জমি থেকে তাদের উৎখাত করে দখলে নেয়ার উদ্দেশ্যে জাহিদুল ইসলাম, তার ছেলে ইরাক প্যাদা, কালাম প্যাদা, রুপচান প্যাদা, বায়েজিদ প্যাদা, আলম মৃধাসহ প্রায় ১৫/২০ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে ক্ষিতিষের দোকানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর শুরু করে। পরে দোকানের পিছনে থাকা বসতঘরেও হামলা চালায় তারা। এসময় ক্ষিতিষ মজুমদার, স্ত্রী লক্ষী রানী (৪৫) ও তাদের ছেলে খোকন চন্দ্র মজুমদার (২৮) তাদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপের প্রতিবাদ করে। এ সময় ওই বাজারের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে ও দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। হামলাকারিরা এক প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ায় স্থানীয় লোকজন প্রতিবাদ করতে এগিয়ে আসেনি এবং সাহস পায়নি। হামলাকারীরা এসময় তাদেরকে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। হামলার খবর পেয়ে খোকনের স্ত্রী অঞ্জনা রানী তার কোলের দুই বছরের কন্যা সন্তানকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে অঞ্জনা রানী ও তার কোলের শিশুকেও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে হামলাকারীরা। পরে হামলার খবর পেয়ে ক্ষিতিষের ভাই যতিন মজুমদার (৭০), মা শেফালী রানী (৯০), জয় চাঁদ মজুমদার (৩৫), কনক বালা (৩৫) ও শিশু কলি ঘটনাস্থলে এসে এর প্রতিবাদ করলে হামলাকারিরা তাদেরকেও পিটিয়ে রক্তাক্ত করে।
দশমিনা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, গতকাল রাতে একই পরিবারের ৮ জনকে আহত অবস্থায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে গুরুত্বর তিন জনকে বরিশাল শেবাচিমে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে অঞ্জু নামের এক অন্তঃস্বত্ত্বাও রয়েছে।
দশমিনা থানার ওসি (তদন্ত) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনার পর ওই এলাকায় পুলিশ টহলে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। আজ সকালে দু’জনকে আটক করা হয়েছে। অন্যদের আটকের জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা