.jpg)
মাত্র ৩ বছর বয়সে বাবা-মাকে হারান ফাতেমা আক্তার (২২)। এরপর পাশ্ববর্তী চরমনসা গ্রামের গোলাম মাওলা ও আমেনা দম্পত্তি তাদের মেয়ের অভাব পূরণে ফাতেমাকে পালক হিসেবে নেন। ২০১৫ সালে এক সরকারি কর্মচারীর সঙ্গে তার বিয়েও দেন তারা। ওই সংসারে একটি কন্যা সন্তান জম্ম লাভ করে। যার বয়সও এখন ৩ বছর। পালক কন্যা বিয়ে করে কিছু পায়নি এমন ভাবনায় স্বামী মাহবুবের নির্যাতন আর অপবাদের তোড়ে সংসার টিকাতে পারেননি ফাতেমা। তাই বাধ্য হয়ে ফিরে যান পালক বাবা-মায়ের কাছে।
কিন্তু এখনপালক বাবা-মার কাছেও ফাতেমার ঠাঁই মিলছেনা এখন। প্লাস দিয়ে টেনে শরীরের বিভিন্ন স্থানে থেতলানো আর রড দিয়ে পিটিয়ে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে তাকে। পালক বাবা-মা ও ৩ ভাই মিলে তার ওপর অমানবিক এ নির্যাতন চালান বলে গণমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেছেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকা নির্যাতিতা ফাতেমা। ঘটনাটি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চরমনসা গ্রামের।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ফাতেমা কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, স্থানীয় ওয়াপদা অফিস সংলগ্ন তাদের মূল বাড়ি। প্রকৃত বাবা মৃত নুরুল ইসলাম। তার ৩ বছর বয়সে বাবা ও মা মারা যান। এরপর তাকে পালক হিসেবে নিয়ে যান পাশ্ববর্তী চরমনসা গ্রামের গোলাম মাওলা। তকেই বাবা হিসেবে জানতো সে। ৪ ভাই ও মা আমেনাসহ সেখানেই বড় হয়েছেন ফাতেমা। তবে তারা তাকে গৃহপরিচারিকা হিসেবে খাটাতো। ২০১৫ সালে সরকারি কর্মচারি (লক্ষ্মীপুর আদালত) মাহবুবের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। পরে একটি কন্যা সন্তানও আসে তাদের সংসারে। কিন্তু বাবা-মায়ের পালক কন্যা জানতে পেরে বিভিন্ন সময়ে তার স্বামী তাকে মারধর করতো। এক পর্যায়ে মিথ্যা অপবাদ তুলে ফাতেমাকে মৌখিক তালাক দেয় তার স্বামী। কিন্তু কাবিনের সাড়ে ৩ লাখ টাকাও এখনো ফাতেমাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে পালক বাবার বাড়ীতে গেলে সেখানে বাবা-মা ও ৪ ভাই তাকে ঠাঁই দেয়নি।
৩ বছরের কন্যা সন্তান নিয়ে গ্রামে প্রাইভেট পড়িয়ে জীবন যাপন করছেন বলে জানান ফাতেমা। অন্যের দয়ার আশ্রয়ে থাকছেন পালক বাবার বাড়ীতে। এমতাবস্থায় আজ শনিবার সকালে তার শিশু তাদের (পালক বাবার) উঠানে প্রস্রাব করাকে কেন্দ্র করে বাবা গোলাম মাওলা, ভাই বাবলু, আজিজ ও আতিক তাকে নির্যাতন করে। পরে আশে পাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত গোলাম মাওলা বলেন, তার মায়ের সাথে খারাপ আচরন করার কারণে তাকে মারধর করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একে এম আজিজুর রহমান মিয়া বলেন, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/ সিফাত আব্দুল্লাহ
