শুদ্ধি অভিযান সারাদেশে চলবে। যতদিন আমরা টার্গেটে পৌঁছতে পারব না ততদিন শুদ্ধি অভিযান চলবে। প্রধানমন্ত্রীর সৎ সাহস আছে। শুদ্ধি অভিযান ঘর থেকে শুরু করেছেন। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে তার অবস্থান কত কঠোর তা তিনি ইতোমধ্যে প্রকাশ করেছন। শেখ হাসিনার এ্যকশান শুরু হয়ে গেছে। দুর্নীতিবাজরা সাবধান, টেন্ডারবাজরা সাবধান, ঘুষখোররা সাবধান, সন্ত্রাসীরা সাবধান।
ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শনিবার ফেনী সরকারি পাইলট হাই স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, বেগম জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে বিএনপি যতটা উদ্বিগ্ন নয়, তার শারীরিক অবস্থাকে পুঁজি করে রাজনৈতিক ইস্যু খোঁজার দুরভিসন্ধি করছে তারা। তারা বলছে আন্দোলন করে বেগম জিয়াকে মুক্ত করবে। গত ২ বছর হয়ে গেল তিনি কারাগারে, তার মুক্তির জন্য দৃশ্যমান কোন আন্দেলন করতে পারেনি। তারা আন্দেলনের হাক ডাক দিচেছ। তাদের হাক ডাক আষাড়ের তর্জন গর্জনের মত।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব বড়বড় কথা বলেন। তারা যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন তারা অপকর্মের কোন শাস্তির ব্যবস্থা করেননি। শেখ হাসিনা শুদ্ধি অভিযান করে সৎ সাহস দেখিয়েছেন। তার সঙ্গে কারও তুলনা হয়না। বর্তমান তার দলের এক সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, মেয়র কারাগারে, সংসদ সদস্যের সাজা হয়েছে। এটা বিরল দৃষ্টান্ত । এটা সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার জন্য। তিনি তার নিজের দলের লোকদেরও ছাড় দেননি। সারা দেশে টেন্ডারবাজ দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে এ অভিযান চালানো হবে। অনেক এমপি, নেতাসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা কর্মচারীরা নজরদারীতে আছেন। পকেট ভারী করার জন্য খারাপ লোকদের দলে আনবেন না। ভদ্র লোকদের জন্য সুশিক্ষিতদের জন্য আওয়ামী লীগের দরজা শেখ হাসিনা খুলে দিয়েছেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগ এদেশের গণমানুষের দল। বাংলাদেশে যত বড় বড় আন্দোলন হয়েছে তার সব গুলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে হয়েছে। বিএনপির আমলে ব্যর্থ বাংলাদেশ এখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারা পৃথিবীতে মডেল দেশে পরিনত হয়েছে। এতিমের টাকা মেরে খাওয়ার কারণে খালেদা জিয়ার থেকে ফেনীসহ সারা দেশ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। মীর্জা ফখরুল ইসলাম বলেন আওয়ামী লীগ খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিবেনা। আপনি মুক্তি কিভাবে চান। খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য দুটি পথ খোলা আছে। একটি আদালতের মাধ্যমে আইনি লড়াইয়ে অপরটি দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে সাধারণ ক্ষমা চেয়ে। তার বিকল্প নাই। আওয়ামী লীগকে ধাক্কা দিয়ে ক্ষমতা থেকে নামানো যাবেনা। আওয়ামী লীগের শিকড় অনেক গভীরে। এই মামলা ২০০৭ সালে তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে হয়েছে। শেখ হাসিনার আমলে নয়।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রহমান বিকমের সভাপতিত্বে শুসেন চন্দ্র শীল ও স্বপন মিয়াজির সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পানি সম্পাদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক প্রটোকল অফিসার আলাউদ্দিন আহম্মেদ চৌধুরী নাসিম ও ফেনী সদর আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী। শোক প্রস্তাব পাঠ করেন জেলার দপ্তর সম্পাদক শহীদ খন্দকার। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চট্রগ্রামের মেয়র আজম নাসির, নোয়াখালী ও লক্ষীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বৃন্দ। তুমুল বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজার হাজার নেতকর্মী সম্মেলন স্থলে স্থীর উপস্থিত থাকায় নতেৃবৃন্দ তাদের ধন্যবাদ জানান।
সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদে একক প্রাথী বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী নির্বাচিত হয়েছেন। সভাপতি পদে চারজন প্রার্থী ছিল। তারা হলেন- বর্তমান সভাপতি আবদুর রহমান বিকম, এডভোকেট আক্রামুজ্জামান, এডভোকেট হাফেজ আহম্মেদ, এডভোকেট প্রিয়রঞ্জন। এর মধ্যে এডভোকেট হাফেজ আহম্মেদ, এডভোকেট প্রিয়রঞ্জন সমাঝোতার মাধ্যমে বসে গেছেন। অপর দুই প্রার্থীর নির্বাচনে এডভোকেট আক্রামুজ্জামান সভাপতি নির্বাচিত হন।
বিডি-প্রতিদিন/ সিফাত আব্দুল্লাহ