মারপিট করাসহ চাঁদাবাজি ও হত্যার হুমকির অভিযোগ এনে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। রবিবার দুপুর দুইটার সময় উপজেলার বাঁশভাগ গ্রামের মো. নজরুল ইসলাম কাজীর ছেলে মো. ইউনুছ কাজী বাদী হয়ে নাটোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. খোরশেদ আলমের আদালতে এ মামলা দায়ের করেন।
এসময় বিচারক শুনানি শেষে আগামী ০২ ডিসেম্বরের মধ্যে তদন্ত পূর্বক আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। মামলায় আসাদসহ অজ্ঞাত আরো ১০/১২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্ত আসাদুজ্জামান আসাদ নলডাঙ্গা উপজেলার রামশার কাজীপুর গ্রামের মো. আনিছুর রহমান শাহ এর ছেলে এবং নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের সদ্য নির্বাচিত চেয়ারম্যান।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. আদিল খান এতথ্য নিশ্চিত করে জানান, বাদী ইউনুছ কাজীর ছোট ভাই কাজী সুমনকে নারায়নগঞ্জ জেলার একটি নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় জামিন ও অব্যাহতি করে দেয়ার কথা বলে দুই লাখ টাকা দাবী করেন আসাদ। ওই দাবী অনুযায়ী ২০১৭ সালের ০৩ নভেম্বর নিজ বসতবাড়িতে বসে স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে ইউনুছ কাজী প্রথম দফায় আসাদকে এক লাখ টাকা দেন। কিছু দিন পরে আবারও মামলার খরচ বাবদ আরো এক লাখ টাকা দাবী করেন। ওই টাকা না দিলে তার ভাইয়ের ক্ষতি হবে বলে ভয় ভীতি দেখান। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে তাদের হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলেন বলে বাদী অভিযোগ করেন। এ অবস্থা চলাকালে ২০১৯ সালের ২৪ অক্টোবর বেলা ১১ টার দিকে ইউনুছ কাজী নলডাঙ্গা বাজারে গেলে আসাদুজ্জামান আসাদ তার ভাড়াটিয়া কয়েকজন অপরিচিত সন্ত্রাসী দিয়ে তাকে তুলে নিয়ে অফিসে নিয়ে যান এবং এক লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেন। এসময় টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাকে মারপিট করা হয়। এক পর্যায়ে তার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করেন। এরপর থেকে আসাদ দাবিকৃত ওই এক লাখ টাকা দেয়ার জন্য তাকে বার বার চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন। অন্যথায় তাকে ও তার ভাই সুমন কাজীকে মারপিটসহ খুন জখম করা হবে বলে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আজ দুপুরে বাদী ইউনুছ কাজী আদালতে উপস্থিত হয়ে মামলা দায়ের করেন। এসময় বিচারক শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
তবে নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান আসাদ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, এটা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছু নয়। তাকে হয় হয়রানি করার উদ্দেশ্যে এ মামলা করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, উল্টো বাদীর কাছ থেকে ২৯ হাজার টাকা পাওনা আছে। তার কাছে ওই টাকা চাইলে তারাই আমাকে হুমকি-ধামকি দিয়েছেন। পরে থানায় বসে এক সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে আমাকে ২৯ হাজার টাকার চেক দেন ইউনুছ। কিন্তু ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে দেখেন তার অ্যাকাউন্টে কোনও টাকা নেই।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক