নরসিংদীতে আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা, জালিয়াতি ও অন্যের সম্পত্তি ভোগদখল করে গত দশ বছরের প্রায় ৫শ' কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন আওয়ামী লীগ নেতা আতাউর রহমান ওরফে সুইডেন আতাউর। রয়েছে একটি শত কোটি টাকার মোল্লা স্পিনিং মিল অবৈধ দখলেরও অভিযোগ। ওই মামলায় গ্রেফতারের পর রবিবার সুইডেন আতাউরকে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এরপর থেকে আলোচনায় এই আওয়ামী লীগ নেতা।
জানা গেছে, নরসিংদী শহরের হাজিপুর এলাকার নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে আতাউর রহমান গত ২০ বছর পূর্বে অবৈধপথে সুইডেন পাড়ি জমান। সেখানে এক বৃদ্ধ নারীকে বিয়ে করে বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পত্তি আত্মসাৎ করে মালিক বনে যান। সেই টাকায় সুইডেনের স্টকহোম ক্রিসেন্টাল সংলগ্ন স্থানে রিও নামে একটি দোকান খোলেন। পরে তিনি সুইডেন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন।
২০০৩ সালের দিকে নরসিংদী শহরের পশ্চিম কান্দাপাড়ায় ৬তলা বিশিষ্ট সুইডেন ভিলা ভবন নির্মাণ করে প্রথমে স্থানীয়দের নজরে আসেন সুইডেন আতাউর। দেশে ফিরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন। বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য তিনি।
অভিযোগ রয়েছে, সুইডেনে সফরে যাওয়া প্রধানমন্ত্রীসহ বড় বড় নেতাদের সঙ্গে ছবি তুলে ফেসবুকে প্রচার করে দেশে প্রভাব বিস্তার করেন। একই সঙ্গে সুইডেন আতাউর ইতিপূর্বে পৌরসভাসহ বিভিন্ন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চেয়ে পোস্টার ব্যানার করে নিজেকে নেতা হিসেবে জাহির করেছেন।
জানা গেছে, আতাউর রহমান নিজেকে সুইডেন আওয়ামী লীগের সভাপতি পরিচয় দিতেন। এ কারণে
আতাউর রহমান গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাকে সুইডেন আওয়ামী লীগের সভাপতি উল্লেখ করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় তার ব্যাখ্যা দিয়েছে সুইডেন আওয়ামী লীগ।
গত ১ নভেম্বর সুইডেন আওয়ামী লীগের সভাপতি এইচ এম জাহাঙ্গীর কবির ও সাধারণ সম্পাদক ডা. ফরহাদ আলী খান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আতাউরকে সুইডেন আওয়ামী লীগের সভাপতি উল্লেখ করে ভুল তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে। আতাউর রহমান সুইডেন আওয়ামী লীগের বর্তমান বা সাবেক কোনো কমিটিরই সভাপতি নন। সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগ কর্তৃক অনুমোদিত ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক স্বীকৃত সুইডেন আওয়ামী লীগের সভাপতি এইচ এম জাহাঙ্গীর কবির ও সাধারণ সম্পাদক ডা. ফরহাদ আলী খান।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গ্রেফতার হওয়া আতাউর রহমান প্রায় তিন বছর ধরেই সুইডেন ছেড়ে সপরিবারে লন্ডনে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। সুইডেন আওয়ামী লীগের সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব