শেরপুর জেলা সদরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় নবজাতক মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। সোমবার রাত সাড়ে দশটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পরে অস্ত্রপচারকৃত প্রসুতির চিকিৎসা না দিয়ে ওই হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ও নার্স কৌশলে পালিয়ে যায়। এই ঘটনার তদন্ত করতে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করে ৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দিয়েছেন জেলার সিভিল সার্জন।
প্রাইভেট ওই হাসপাতালের আইনগত বৈধতা আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দ্রুত রির্পোট প্রদান করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন, হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. লুৎফর রহমান, সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. আব্দুল করিম ও শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুজ্জামন।
প্রসূতির স্বজনরা জানান, শেরপুর জেলা শহরের খোয়ার পাড় মহল্লার শাহিনুর রহমান পনিরের স্ত্রী তানিয়া (২২) সন্তানসম্ভবা হওয়ার পর থেকেই শহরের গোপালবাড়ীর (প্রাক্তন পারভিন ক্লিনিক) বর্তমানে ইউনাইটেড হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. হাসিনাতুল ফেরদৌস লোপা’র তত্ত্বাবধায়নে ছিলেন। সোমবার সকালে পনিরের স্ত্রী তানিয়া ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে তাকে শেরপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ সময় প্রসূতির ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. হাসিনাতুল ফেরদৌস লোপা’র কাছে পরামর্শ চাইতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে চিকিৎসকের স্বামী ইলেট্রনিক্স ব্যবসায়ী মিলন ফোন ধরে বিভিন্ন ঔষধ খাওয়ার পরামর্শ দেন। পরে ওই চিকিৎসকের স্বামী রোগীর স্বামীকে ফোন করে গর্ভের সন্তানের ক্ষতির ভয়ভীতি দেখিয়ে তার মালিকানাধীন ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার জন্য চাপ দেয় এবং দুজন মহিলা দালাল নিয়োগ করে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দালালের মাধ্যমে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়। রোগীকে রাত সাড়ে দশটার দিকে মিলনের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ডা. মুসলিমা আক্তার মৌসুমী অস্ত্রপচার করলে প্রসূতির গর্ভের সন্তান মারা যায়।
জানা গেছে, মারা যাওয়া ওই শিশুর শরীরের নানা স্থানে কাটা ছেড়ার দাগ আছে। প্রসূতির নিয়মিত ডাক্তার লোপকে দিয়ে সিজার করানোর কথা থাকলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের মন মত ডাক্তার দিয়ে সিজার করান। প্রসূতির স্বজনরা জানিয়েছে, একই ডাক্তার রোগীকে অজ্ঞান ও সিজার করেন।
প্রসূতির ভাসুর বীমা কর্মকর্তা হাসিনুর রহমান লিটন জানিয়েছেন অভিযুক্ত তিন জন ও অপরাপর আরও ৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মমর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, ওই মৃত শিশুর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে ও মাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মামলা দিলেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সিভিল সার্জন ডা. আবুল কালাম মো. আনোয়ারুল রউফ জানিয়েছেন, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল