৭ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১১:৩৫

আজ নোয়াখালী মুক্ত দিবস

নোয়াখালী প্রতিনিধি

আজ নোয়াখালী মুক্ত দিবস
আজ ৭ ডিসেম্বর। নোয়াখালী মুক্ত দিবস। মুক্তিসেনারা এইদিন জেলা শহরের মাইজদি পিটিআই’তে রাজাকারদের প্রধান ঘাঁটির পতন ঘটিয়ে নোয়াখালীর মাটিতে উড়িয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের বিজয় পতাকা। 
 
তবে স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের কবর , গণকবরগুলো আজও সংরক্ষিত হয়নি।                                   
দখলদার বাহিনী ও রাজাকাররা ৭১-এর বিভিন্ন সময়ে জেলা শহরের শ্রীপুর, সদরের রামহরিতালুক, গুপ্তাঙ্ক, বেগমগঞ্জের কুরিপাড়া, গোপালপুর ও আমিশাপাড়ায় নির্বিচারে হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়।
 
এ সময় হায়নাদাররা গুলি ও পুড়িয়ে হত্যা করে দেড় শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশুকে। গান পাউডার দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় ঘরবাড়ি, দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। একই সঙ্গে পাক হানাদার ও রাজাকাররা মেয়েদের ধরে নিয়ে ক্যাম্পে আটকে রেখে পাশকবিক নির্যাতন করে।
 
মুক্তিযোদ্ধারা দেশের অভ্যন্তরে ও ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধ করেন। কোম্পনীগঞ্জের বামনী, তালমাহমুদের হাট, ১২নং স্লুইস গেইট, সদরের ওদারহাট, করমবক্স, বেগমগঞ্জের ফেনাকাটা পুল, রাজগঞ্জ, বগাদিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা।
 
নোয়াখালী মুক্ত হওয়ার আগ মুহূর্তে ৬ ডিসেম্বর গভীর রাতে মাইজদী পিটিআই ও বেগমগঞ্জ টেকনিক্যাল হাইস্কুল ক্যাম্প ছেড়ে কুমিল্লা সেনানিবাসের উদ্দেশ্যে পালিয়ে যেতে থাকে পাকিস্তানি মিলিটারিরা ও মিলিশিয়ারা।
 
এ সময় বেগমগঞ্জ-লাকসাম সড়কের বগাদিয়া ব্রিজ অতিক্রম করতেই সুবেদার লুৎফুর রহমান ও শামসুল হকের নেতৃত্বাধীন মুক্তি বাহিনীর অসংখ্য পাক সেনা ও মিলিশিয়া নিহত হয়।
 
মুক্ত দিবসের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক হানিফ, মোশারফ হোসেন ও এনাম আহসান জানান, ৭ ডিসেম্বর ভোররাত থেকে মুক্তিযোদ্ধারা নোয়াখালীকে শত্রুমুক্ত করার জন্য অপারেশন শুরু করেন।
 
সন্ধ্যা ঘনিয়ে অন্ধকার নেমে আসার সঙ্গে সঙ্গে ক্যাম্প ছেড়ে পালাতে থাকে রাজাকাররা। এ সময় বিপরীত দিক থেকে গুলি বন্ধ হলে মুক্তিযোদ্ধারা ক্যাম্পের ভেতরে গিয়ে দেখতে পান সেখানে ১০-১২ জন রাজাকারের লাশ পড়ে আছে। আরও কয়েকজন রাজাকার ধরা পড়ে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে। এভাবে ৭ ডিসেম্বর মুক্ত হয় নোয়াখালী জেলা।
 
মুক্ত দিবসের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাম্মেল হক মিলন, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা জেলা কমান্ডার মিজানুর রহমান,  মমতাজুল করিম বাচ্চু জেলা ডেপুটি কমান্ডার,
স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের কবর, গণকবরগুলো আজও সংরক্ষিত হয়নি। বিশেষ করে মাইজদি পিটিআই হানাদারদের ক্যাম্পে অত্যাচার ও গুলি করে মুক্তিযোদ্ধা এবং স্বাধীনতাকামীদের হত্যার পর জেনারেল হাসপাতালের পিছনে গর্ত করে পুতে ফেলত, তাদের কবরগুলো সংরক্ষিত হয়নি। 
 
মুক্তিযোদ্ধা মিয়া মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করছে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বিজয়মেলা কমিটি, সম্মিলিত সাংষ্কৃতিক জোট। 
 
বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর