ভারতীয় হাই কমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাশ টুঙ্গীপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। সোমবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটে তিনি টুঙ্গীপাড়া সমাধি সৌধে পৌঁছান। সাড়ে ৯টায় তিনি বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে বঙ্গবন্ধুর আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
এরপর ভারতীয় হাই কমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাশ বঙ্গবন্ধুর সমাধি ঘুরে দেখেন এবং বঙ্গবন্ধু ভবনে কিছু সময় কাটান। পরিদর্শন বইয়ে তার মন্তব্য লেখেন। এরপর তিনি প্রধানমন্ত্রীর মামাতো ভাই, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপির বাসভবনে যান। সেখানে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ ভারতীয় হাই কমিশনারকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। পরে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
ভারতীয় হাই কমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাশ বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পেরে আমি খুব সম্মানিত বোধ করছি। আপনারা জানেন ভারতের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর একটা অন্যরকম সম্পর্ক ছিলো। তিনি যখন বক্তৃতা করতেন, তা অল ইন্ডিয়া রেডিওতে ব্রডকাস্ট হতো। আমি তখন অনেক ছোটো। তখন তিনি কি বলতেন, ওগুলো হয়তো বুঝতে পারতাম না। কিন্তু আমাদের দেশে তার বক্তব্যের প্রতি ইমোশন খুব স্ট্রং। আমার কাছে সেটা এখনও মেমোরি হয়ে আছে।
ভারতীয় হাই কমিশনার বলেন, আমার মনে আছে, ওই সময়কার কথা, যখন অল ইন্ডিয়া রেডিওতে বঙ্গবন্ধুর বক্তব্যগুলো পুরো পরিবারের সঙ্গে বসে শুনেছি, আজ এখানে দাঁড়িয়ে তাকে শ্রদ্ধা জানাতে পেরে আমি খুবই সম্মানিত বোধ করছি। আমরা জানি যে, বাংলাদেশ ও ভারতের সঙ্গে সম্পর্কটা ঐতিহাসিক। আমাদের দুই দেশের সভ্যতার মধ্যে একটি মিল রয়েছে, এতে বঙ্গবন্ধুর একটা বিশাল ভ‚মিকা রয়েছে। তিনি বলেন, এশিয়ান লিডারদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু একজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ নেতা। যে সাহস ও ভিশন দিয়ে তিনি পথ শুরু করেছিলেন, সেটা শেষ করতে পারেননি। ওনার স্বপ্ন সোনার বাংলা, সেটাকে আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাস্তবায়িত করতে যাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে ভারত আগেও ছিল এবং সব সময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে।
রিভা গাঙ্গুলী দাশ বলেন, এই যে সোনার বাংলা গড়ার যে ভিশনটা যেটা বঙ্গবন্ধুর ছিলো, আজকে আমরা দেখতে পাচ্ছি বাংলাদেশে প্রচুর প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এটা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সামাজিক প্রবৃদ্ধি সব দিকেই দেখি অনেক উন্নয়ন হচ্ছে। ঢাকা থেকে টুঙ্গীপাড়া আসার পথে রাস্তায় অনেক আরামদায়ক যাত্রা, এই পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে আমরা আগেও ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকবো। অমাদের দুই দেশের বন্ধুত্ব খুবই স্ট্রং এবং এটা আরো স্ট্রং হবে।
তিনি বলেন, ১৭ মার্চ থেকে মুজিববর্ষ উদ্যাপনের ক্ষেত্রে আমরা অংশ নিতে প্রস্তুত। আমার বিশ্বাস, মুজিববর্ষে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে আমাদের দুই দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধুত্ব আরো দৃঢ় ও গভীর হবে।
এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, গোপালগঞ্জ পৌর মেয়র কাজী লিয়াকত আলী, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ লুৎফর রহমান বাচ্চু, টুঙ্গীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, উপজেলা চেয়ারম্যান সোলায়মান বিশ্বাস, কোটালীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান বিমল কুমার বিশ্বাস, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মিটু, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তাসবিরুল হুদা বাবু, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন