নরসিংদীর শিবপুরে স্কুলের তালা খুলে ক্লাস শুরুর দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। এসময় স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির অপাসারণের দাবিও জানানো হয়। পরে শিবপুর থানা পুলিশ ও ইউএনওর হস্থক্ষেপে স্কুলের তালা খুলে ক্লাস শুরু হয়।
স্কুলের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের দ্বন্দ্বের জেরে গত শুক্রবার থেকে স্কুলটির প্রধান শিক্ষকের রুমে তালা দিয়ে স্কুল বন্ধ করে দেয় স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মজিবুর রহমান খৈনকুটী। এরই জেরে আজ মঙ্গলবার সকালে শিবপুর উপজেলার খৈনকুট উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রাঙ্গনে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে।
স্কুল সূত্রে জানা যায়, খৈনকুট উচ্চ বিদ্যালয়ের ফান্ডের টাকাসহ নানা বিষয় নিয়ে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মজিবুর রহমান খৈনকুটীর সঙ্গে প্রধান শিক্ষক মো. ফাসাদ মিয়ার মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। এরই মধ্যে স্কুলের নামে জমি ক্রয় করার কথা বলে স্কুলফান্ড থেকে সাড়ে ৮ লাখ টাকা তুলে নেন সভাপতি মজিবুর। পরে সেই টাকায় তিনি নিজ নামে জমি ক্রয় করেন। গত শুক্রবার জরুরী এক সভায় স্কুল ফান্ডের টাকায় কেনা জমি সভাপতি মজিবুরকে স্কুলের নামে রেজিস্ট্রি করে দিতে বলা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সভাপতি মজিবুর স্কুলের দুইটি রেজ্যুলেশন খাতা, একটি নোটিশ খাতা, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের চেকবইসহ প্রয়োজনীয় সব জোড়পূর্বক নিয়ে যায়। পরে তিনি প্রধান শিক্ষকের রুমে তালা ঝুলিয়ে দেন।
শুধু তাই নয়, সরকারি বিধি-বিধান অমান্য করে সভাপতির সিদ্ধান্তে প্রধান শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্থের চিঠি ইস্যু করেন।
মঙ্গলবার বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের কক্ষের তালা খুলে ক্লাস শুরু দাবি জানালে বহিরাগত দুই সন্ত্রাসী নিয়ে আরও একটি তালা ঝুলিয়ে দেন সভাপতি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি করে শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী। খবর পেয়ে ইউএনও হুমায়ন কবিরের নির্দেশে উপজেলা অ্যাকাডেমি সুপারভাইজার গিয়াস উদ্দিন গিয়ে স্কুলের তালা খুলে দেন। পরে স্বাভাবিকভাবে বিদ্যালয়ের ক্লাস শুরু হয়।
স্কুলের দফতরি হাবিব মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, সোমবারও স্কুলের তালা খুলতে দেয়া হয়নি। মঙ্গলবার সকালে স্কুলের তালা খুলতে গেলে সভাপতি মজিবুর বহিরাগত দু’জনকে নিয়ে স্কুলের তালা খুলতে বাধা দেন। এসময় তিনি আরও একটি তালা লাগিয়ে আমাকে স্কুল থেকে তাড়িয়ে দেন। পরে শিক্ষার্থী বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় সঙ্গে এলাকাবাসীও যুক্ত হয়। বিক্ষোভটি স্কুল থেকে শুরু হয়ে সভাপতির বাড়ি হয়ে কুঁঠিবাজার এলাকা ঘুরে একই স্থানে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।
উপজেলা অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজার গিয়াসউদ্দিন বলেন, ইউএনওর নির্দেশে বাগাব ইউপি চেয়ারম্যান, স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, পুলিশসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে স্কুলের তালা খুলে দেয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করেছেন তার কোনো প্রমাণ এই মুহূর্তে সভাপতি দেখাতে পারেননি। তাছাড়া প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বহিষ্কার করার এখতিয়ার সভাপতির নেই। দু’এক দিনের মধ্যে এর সুরাহা করা হবে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সভাপতি মজিবুর রহমান। তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক স্কুল ফান্ডের হিসাব চাইলেই নানা গড়িমসি করেন। তাই তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং শিক্ষক সংকটের কারণে স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল