৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ মাগুরা-ঝিনাইদহ ৪ লেন বিশিষ্ট সড়কের নির্মাণ কাজ যথা সময়ে শেষ না হওয়ায় চরম জনদুর্ভোগ তৈরি হচ্ছে। চলতি বছরের ১৫ মার্চ এই কাজ শেষ হওয়ার কথা। কাজটি শুরু হয়েছে ২০১৬ সালে। এরই মধ্যে দু’বার সময় পিছিয়ে সর্বশেষ ১৫ মার্চ এই কাজ সম্পাদনের তারিখ নির্ধারিত হয়। কিন্তু কাজের ধীরগতি ও সড়কের অধিগ্রহণকৃত ১ কিলোমিটার জায়গা নিয়ে মামলা থাকায় যথা সময়ে কাজটি সম্পন্ন হচ্ছে না।
অন্যদিকে গোটা ৮.৮ কিলোমিটার সড়কের যে টুক কাজ শেষ হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সড়ক ও জনপদ বিভাগ দাবি করেছে, সেখানে কাজ নিম্নমানের হওয়ায় অনেক স্থানে ক্ষত ও গর্ত তৈরি হয়েছে। ভেঙে গেছে ডিভাইডার। তড়িঘড়ি করে এসব ডিভাইডার ও ক্ষত স্থানে নতুন করে সংস্কারের প্রয়োজন হওয়ায় কার্য সম্পাদন আরও পিছিয়ে গেছে।
এদিকে, ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক নির্মাণে দীর্ঘ ৪ বছর সময় লাগায় জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। প্রতিনিয়ত রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি ও কাজের প্রয়োজনে রাস্তা সংকুচিত হয়ে যাওয়ায় একদিকে যেমন যানজট তৈরি হচ্ছে। তেমনি সড়ক এলাকায় ব্যবসায়ী ও প্রান্তিক কর্মজীবীরা পড়েছেন ভোগান্তিতে।
২০১৬ সালে সড়ক ও জনপথ বিভাগ মাগুরার রামনগর থেকে পুলিশ লাইন্স পর্যন্ত ৮.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু করে। যার মধ্যে পারনান্দুয়ালী থেকে পুলিশ লাইন্স পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার চার লেনের। বাকি অংশ দুই লেনের। দুই লেনের ৪.৮ কিলোমিটার সড়কের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। কিন্তু ৪ লেনের রাস্তা নির্মাণে ধীর গতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে শুরু থেকেই। এছাড়া ঢাকা রোড বাস স্টেশন এলাকার এক ব্যক্তি অধিগ্রহণকৃত জমির উচ্চ মূল্যের দাবিতে আলাদতে মামলা করায় জটিলতা তৈরি হয়েছে।
এছাড়া ইতোমধ্যে শেষ হওয়া কিছু অংশে ফাটল ও গর্ত দেখা দেয়ায় নতুন করে সংস্কার প্রয়োজন হয়েছে। একই অবস্থা চার লেনের মাঝখানে দেয়া ডিভাইডারের অংশই ভেঙে যাওয়ায় চলছে নিত্যদিনের সংস্কার।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, অনেক স্থানেই ডিভাইডারে চলছে সংস্কার কাজ। এছাড়া কোনো কোনো স্থানে এখনো রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। ফলে চলতি বছরের ১৫ মার্চের মধ্যে এ কাজ শেষ না হবার শঙ্কা শতভাগ। একই মত দিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সংশ্লিষ্টরাও।
এ বিষয়ে মাগুরা সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম জানান, ৬২ কোটি টাকায় রামনগর থেকে পুলিশ লাইন পর্যন্ত ৮.৮ কিলোমিটার সড়ক প্রসস্তকরণ কাজের সাথে ল্যান্ড রিকুজিশন ছিল। ল্যান্ড রিকুজিশনে সময় লেগে গেছে অনেক। যে কারণে প্রথম মেয়াদের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। দ্বিতীয় দফায় কাজ দ্রুত এগিয়ে চললেও একটি মামলা এখনো নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়নি। যে কারণে আগামী ১৫ মার্চের মধ্যের কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না। চলমান অবস্থায় যদি কোথাও কোনো ত্রুটি হয়ে থাকে সেখানে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিজ দায়িত্বে সম্পন্ন করবেন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন