বগুড়ার ধুনট-শেরপুর পাকা সড়কের ভরনশাহী বদলার খালে স্টিলের দু’টি সেতু এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সেতুগুলো অনেক পুরনো হওয়ায় ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন শত শত যানবাহন চলাচল করছে। এতে যে কোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
বেইলি ব্রিজটি ভেঙে পড়লে দুই উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। দুর্ভোগে পড়বে দুই উপজেলার লাখো মানুষ।
বগুড়ার ধুনট উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, ১৯৯০ সালের দিকে ধুনট-শেরপুর পাকা সড়কের পশ্চিম ভরনশাহী বদলার খালে প্রায় ৩০ মিটার ও মাঠপাড়া খালের ওপর প্রায় ৫০ মিটার দৈর্ঘ্য বেইলি স্টিলের সেতু নির্মাণ করে সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ)। ওই দুটি সেতুর ওপর দিয়ে অতিরিক্ত মালামাল বোঝাই যানবাহন পারাপারে সেতুর পাটাতন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারপরও সেতুর ওপর দিয়ে অতিরিক্ত মালামাল বোঝাই যানবাহন পারাপার হতে থাকে। এ অবস্থায় ওই দু’টি সেতু কয়েক দফা ভেঙে যানবাহন খাদে পড়ে যায়।
কয়েকদিন ভোগান্তির পর আবারও ঝালাই দিয়ে সেতুগুলো মেরামত করে কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে বেইলি সেতু দুটির কয়েকটি পাটাতন দেবে ও ঝালাই খুলে গেছে। কিন্তু তারপরও ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন শত শত যানবাহন চলাচল করছে। এই সেতু দিয়ে বগুড়া জেলা সদর ছাড়াও ধুনট উপজেলাবাসি শেরপুর উপজেলার সাথে যোগাযোগ করে থাকে। এই সড়ক হয়ে প্রয়োজনে ধুনট উপজেলাবাসি ঢাকায় যাতায়াত করে থাকে। ধুনট উপজেলার কৃষির উৎপাদন ধান, পাট, সবজি ও মাছ পরিবহন থাকে। এই ব্রিজটি ভেঙে পড়লে দুই উপজেলার প্রায় লাখ লাখ মানুষ দুর্ভোগে পড়বে। স্থানীয়রা এই সড়কের উপর নির্মিত ব্রিজটি মেরামতের জন্য দাবি জানিয়ে আসছে।
ধুনট বাজারের ব্যবসায়ী আবুল কালাম ও হায়দার আলী জানান, বগুড়া জেলা সদরের সঙ্গে ধুনট, শেরপুর, সোনাহাটা, মথুরাপুর, জোড়শিমুল, গোসাইবাড়ি, ঠেকুরিয়া ও কাজিপুর উপজেলার যোগাযোগের প্রধান সড়কের দুটি সেতু এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এ সড়কে যাতায়াতের জন্য বিকল্প কোনো পথ নেই। তাই জীবন ও জীবিকার তাগিদে এ সেতুর ওপর দিয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করছেন তারা। এই পথ দিয়ে স্থানীয়রা হাজার হাজার চাষিরা তাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য পরিবহন করে থাকে।
ট্রাক চালক ফরহাদ হোসেন বলেন, ধুনট-শেরপুরের এই সড়ক ছাড়া বিকল্প কোনো যাতায়াতের ব্যবস্থা নেই। তাই ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও এ সেতুর ওপর দিয়ে যাতায়াত করছি। গাড়ি না চালালে পরিবার পরিজন নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। এই সেতুর উপর উঠলে অনেক সময় ঝুাঁকুনি হতে থাকে। এটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে।
ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিয়া সুলতানা বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বেইলি সেতু মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট (সওজ) বিভাগের কর্মকর্তাদের তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
বগুড়া সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান জানান, এর আগে বেইলি সেতুটি সংস্কার করে অধিক ওজনের যানবাহন পারাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রাখা হয়। কিন্ত পরিবহনের চালকরা এ নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে অতিরিক্ত মালামাল বোঝাই ট্রাক পারাপার করায় সেতুগুলো আবারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই দ্রুত সেতুগুলো মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন