নাটোরে দুদক কর্মকর্তা ও সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে তিন প্রতারককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন, গুরুদাসপুরের তালবাড়িয়া পূর্বপাড়ার গ্রামের আবু সাঈদ ও একই উপজেলার হাঁসমারি গ্রামের হাফিজুল ইসলাম ও তার ছেলে হৃদয় হোসেন। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে গুরুদাসপুর থানায় একটি প্রতারণা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তিন যুবক মোটরসাইকেল নিয়ে নয়াবাজার এলাকায় পল্লী চিকিৎসক আল আমিন দোকানের সামনে উপস্থিত হন। এ সময় তাদের সকলের হাতেই ওয়াকিটকি ছিল। কিছু সময় পর আরও দুই যুবক আবু সাঈদ ও হাফিজুল ইসলাম হাতে ওয়াকিটকি নিয়ে চলে আসে তার দোকানে। এসেই তারা তাদের পরিচয় দেন যে তারা দুদক কর্মকর্তা। তারা এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন। এসময় তারা তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র দেখতে চান।
কাগজপত্র দেখে তারা জানান, প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। এখন হয় জরিমানা অথবা কারাদণ্ড মানতে হবে বলে ভয় ভীতি প্রদর্শন করেন। পরে এক হাজার টাকা নিয়ে ঘটনাটি কাউকে না জানানোর জন্য শাসিয়ে যায় তারা। এরপর বাজারের অন্য ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা শেষে পল্লী চিকিৎসক আল আমিন থানায় গিয়ে গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে একটি প্রতারণা মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার রাতে উপজেলার হাঁসমারি গ্রামের হাফিজুল ইসলাম ও তার ছেলে হৃদয় হোসেনকে তাদের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যমতে মশিন্দা থেকে আবু সাঈদকে গ্রেফতার করা হয়।
এ ব্যাপারে গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাহারুল ইসলাম জানান, এই প্রতারক চক্রটির বিরুদ্ধে অনেক ব্যবসায়ীর মৌখিক অভিযোগ ছিল। এছাড়াও তারা কখন কোন এলাকায় গিয়ে সাংবাদিক বা দুদক কর্মকর্তা পরিচয়ে, কখনো কখনো পুলিশের এসআই, কখনো সেনাবাহিনীর অফিসার পরিচয় দিয়ে প্রতরণা করে আসার বিষয়টি পুলিশ পরে জানতে পারে। এ নিয়ে তাদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ কয়েকদিন ধরেই জাল পেতেছিল। পরে পল্লী চিকিৎসকের লিখিত অভিযোগ পেয়ে হাফিজুল ইসলামের বাড়ীতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাকে ও তার ছেলে হৃদয়কে গ্রেফতার করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যমতে আবু সাঈদকেও গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ওয়াকিটকি, এসআইয়ের ভূয়া আইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে থানায় প্রতারণা মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেফতারদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম