দিনাজপুরের ফুলবাড়ীসহ বিভিন্ন উপজেলায় শুরু হয়েছে বোরো চারা রোপণ। মাঠে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও কাজ করছেন সমানতালে। নারী ও পুরুষ শ্রমিক একই কাজ করলেও রয়েছে মজুরি বৈষম্য। বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, চলছে বোরো ধানের চারা রোপণের কাজ। কৃষান-কৃষাণিরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মাঠেই। তবে পুরুষের চেয়ে বেশি সংখ্যায় রোপণ কাজ করছেন নারী শ্রমিকরা। দৈনিক মজুরিতে রোপণের কাজ করছেন তারা। অথচ মজুরি কম পাচ্ছেন।
ফুলবাড়ী উপজেলার আলাদীপুর ইউপির বাসুদেবপুরের সূর্যপাড়া গ্রাম থেকে জমিতে কাজ করতে আসা নারী শ্রমিক পুষ্প মার্ডি, বাহামনি মুর্মু, নির্মলা টুডু ও ইপিপিনা মার্ডি বলেন, কৃষি কাজে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত রয়েছেন। সকালে উঠে বাড়ির কাজ সেরে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত মাঠে বোরো চারা রোপণ কাজ করছেন তারা। পুরুষের তুলনায় বেশি কাজ করেও মজুরি বৈষম্যের শিকার তারা। তারা বলেন, একই কাজ সমানতালে করলেও তারা কেন পুরুষ শ্রমিকের চেয়ে মজুরি কম পাবেন?
কৃষক জাবেদ খান বলেন, সকাল ৮টা থেকে ৫টা পর্যন্ত জমিতে কাজ করে তিনি প্রতিদিন ৪০০ টাকা মজুরি পাচ্ছেন। নারীরা বাড়ির সব কাজ করে জমিতে দেরি করে আসার কারণে জমি মালিকরা তাদেরকে কম মজুরি দিচ্ছেন। এটা মনে হয় ঠিক না।খয়েরবাড়ি ইউনিয়নের মুক্তারপুর ডাঙাপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল আলিম বাবু জানান, তিনি এ বছর পৌণে দুই বিঘা জমিতে বোরো চারা রোপণ করছেন। কৃষাণের তুলনায় কৃষাণিদের কাজের মান ভালো হওয়ায় তিনিসহ প্রত্যেকে নারীদের দিয়ে বোরো চারা রোপণ কাজ করাচ্ছেন। তবে নারীদের বেতন কম কারণ, তারা সকাল ৯টায় কাজে আসেন। আর পুরুষেরা সকাল ৮টায় আসায় তাদের বেতন বেশি। তিনি দুপুরের খাওয়া-দাওয়া বাদে কৃষাণিদের দিচ্ছেন ৩০০ টাকা ও কৃষাণকে দিচ্ছেন ৪০০ টাকা।
কৃষক বেলাল উদ্দিন বলেন, স্থানীয় কোন কৃষাণ-কৃষাণি না পাওয়ায় তিনি পাশের বিভিন্ন উপজেলা থেকে ৬ জন কৃষাণ এনে পৌণে ৫ বিঘা জমিতে চারা রোপণ করছেন। বাইরের কৃষাণ তাই তাদের জন্য দুপুরের খাওয়ার আয়োজন করতে হচ্ছে। তাই এক বেলা খাবার দেওয়ার কারণে তাদের প্রত্যেককে ৩০০ টাকা করে দিন মজুরি দেওয়া হচ্ছে। তবে বর্তমানে পুরুষ শ্রমিকদের হাজিরা বেশি হলেও নারী শ্রমিকদের কিছুটা মজুরি কমে পাওয়া যায়।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন
