ভুট্টা থেকে স্বাস্থ্য সম্মত কর্ন ওয়েল বা তেল উৎপাদন করা সম্ভব। এই কর্ন ওয়েল উৎপাদন করা গেলে বিদেশ থেকে আর তেল আমদানী করতে হবে না। এতে বৈদেশিক মুদ্রাও বাঁচবে এবং এর উৎপাদন বাড়ার পাশাপাশি কৃষকরা বেশী লাভবান হবেন। আর এই ভুট্টা থেকে কর্ন ওয়েল বা তেল উৎপাদন করতে পারলে বিদেশ থেকে তেল আমদানী করতে হবে না। বরং নিজেদের উৎপাদিত তেলেই বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পন্ন হয়ে সেনার বাংলায় পরিণত হবে।
মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটের আয়োজনে ভুট্টা ও গম উন্নয়নে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বিজ্ঞানী, এমিরিটাস সাইন্টিস্ট ও সাবেক বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ড. কাজী এম বদরুদ্দোজা এসব কথা বলেন।
ভুট্টা ও গম উন্নয়নে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘আমিই প্রথম বাংলাদেশে গম-ভুট্টার প্রচলন নিয়ে এসেছি। আমাদের দেশে যখন শুধু ধান চাষ হত, তখন আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ ছিলাম না। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার জন্য আমাদের গম ও ভুট্টা বিরাট ভূমিকা পালন করেছে। বর্তমানে গম ও ভুট্টার চাষ করে আমরা যেমন কৃষিতে লাভবান হচ্ছি তেমনি আগামীতে এই ভুট্টা থেকে তেল তৈরি করে এদেশের তেলের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। আমাদের এখন সেই তেল তৈরি করার মেশিনটা আবিষ্কার করতে হবে। যদিও উন্নত দেশে এই মেশিনের প্রচলন আছে তথাপি আমি চাই বাংলাদেশে যারা ভুট্টা গবেষণার সাথে জড়িত আছে তারা নিজেরাই এই মেশিনটি তৈরি করে ভুট্টা থেকে তেল উৎপাদন করতে পারে।
ড. কাজী এম বদরুদ্দোজা বলেন, আমি প্রথমে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট এলাকায় ভুট্টা চাষের জন্য ওই এলাকার সাওতাঁলদের উদ্বুদ্ধ করেছিলাম। তাদের কাছ থেকেই পরবর্তীতে ভুট্টার বীজ এনে দেশের অন্যান্য এলাকায় ছড়িয়ে দেই। তৎকালিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের এসব কাজে অনেক সহযোগিতা করেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, গম ও ভুট্টার আবাদ বাড়ার সাথে এর চাহিদাও বেড়েছে। এই গম ও ভুট্টাকে মানুষের প্রয়োজনে ব্যবহারও বেড়েছে। আর এই ভুট্টা থেকে তেল উৎপাদন করা গেলে এর চাহিদা পুরনের পাশাপাশি চাষও বৃদ্ধি পাবে এবং কৃষকরা লাভবান হবে।
ভুট্টা ও গম উন্নয়নে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কর্মশালায় বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. এছরাইল হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আব্দুল আউয়াল, ড. মো. বদরুজ্জামানসহ কৃষি বিজ্ঞানী ও স্থানীয় কৃষকরা।
অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. এছরাইল হোসেন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কৃষি বিজ্ঞানী ড. কাজী এম বদরুদ্দোজা কৃষি ক্ষেত্রে বাংলাদেশে যে অবদান রেখেছেন তা অপকল্পনীয়। আমরা ভুট্টা থেকে তেল তৈরি করার মেশিন আবিষ্কারের চিন্তা করছি। এজন্য আমাদের সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহযোগিতার প্রয়োজন। ভুট্টা থেকে তেল আবিষ্কার করতে পারলে বাংলাদেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে বলে তিনি মনে করেন।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম