পোশাক খাতে সুষ্ঠু আইনশৃঙ্খলা ও স্থিতিশীল শ্রম পরিস্থিতি বজায় রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) ধারাবাহিকভাবে শ্রমিক ফেডারেশনগুলোর সাথে মতবিনিময় সভা আয়োজন করে আসছে।
এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার (১৩ জুলাই) রাজধানীর উত্তরার বিজিএমইএ কার্যালয়ে আইবিসিভুক্ত শ্রমিক ফেডারেশন প্রতিনিধিদের সাথে বিজিএমইএ নেতাদের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বিজিএমইএ ও আইবিসিভুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনগুলো কিভাবে একসাথে কাজ করে পোশাক শিল্পকে এগিয়ে নিতে পারে, দেশে ও বিদেশে শিল্পের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে পারে এবং শ্রমিক ভাইবোনদের আইনসঙ্গত সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা হয়।
বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ-এর সহ-সভাপতি মো. রেজোয়ান সেলিম এবং পরিচালক আসেফ কামাল পাশা।
সভায় পোশাক শিল্পের সার্বিক কার্যক্রম মসৃণভাবে পরিচালনার স্বার্থে সুষ্ঠু আইনশৃঙ্খলা ও স্থিতিশীল শ্রম পরিবেশ বজায় রাখার বিষয়ে আইবিসিভুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনগুলোর সহযোগিতা চাওয়া হয়। বিশেষ করে, আইন-বহির্ভূত দাবি বা তুচ্ছ ঘটনার জেরে অথবা দাবি আদায়ের নামে শ্রমিক ভাইবোনরা যেন রাস্তা অবরোধের মতো কর্মসূচি গ্রহণ না করে, সে ব্যাপারে বিজিএমইএ এর পক্ষ থেকে আইবিসিভুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনগুলোর নেতৃবৃন্দকে সহযোগিতা প্রদানের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান পোশাক শিল্পের শ্রমিক ভাইবোনদের জন্য বিজিএমইএ কর্তৃক গৃহীত বর্তমান বোর্ড এর উদ্যোগগুলো সম্পর্কে শ্রমিক ফেডারেশনের নেতাদের অবহিত করেন। এসব উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে গাজীপুর, আশুলিয়া ও সাভারে আঞ্চলিক অভিযোগ নিষ্পত্তি সেল স্থাপন, গার্মেন্টস অধ্যুষিত এলাকায় শ্রমিকদের জন্য হাসপাতাল নির্মাণ এবং তাদের জন্য ফুড রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা। তিনি এই উদ্যোগগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা/মতামতসহ সহযোগিতা প্রদানের জন্য আইবিসিভুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনগুলোকে অনুরোধ জানান। শ্রমিক ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ বিজিএমইএ এর এই উদ্যোগগুলোকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, তারা অতি শীঘ্রই স্ব স্ব সংস্থা থেকে প্রস্তাবনা পাঠাবেন।
বিজিএমইএ সভাপতি আরও বলেন, কারখানার অভ্যন্তরে শ্রমিকদের ইস্যুগুলো তাৎক্ষণিকভাবে নিষ্পত্তির লক্ষ্যে বিজিএমইএ মিড লেভেল ম্যানেজমেন্টকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে তোলার উদ্যোগ নিচ্ছে। শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা এতে একমত পোষণ করে অভিমত প্রকাশ করেন যে, প্রশিক্ষণ প্রদানের পর এগুলো ফলো-আপ ও মনিটরিং করা জরুরি।
সভায় উভয় পক্ষ পোশাক শিল্পে সুষ্ঠু ও স্থিতিশীল শ্রম পরিবেশ বজায় রাখার বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেন।
মতবিনিময় সভায় আইবিসিভুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনগুলোর পক্ষ থেকে আলোচনায় অংশ নেন জেড এম কামরুল আনাম, সভাপতি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন (বিএনটিইউএফ); আমিরুল হক আমীন, সভাপতি, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন; রাশেদুল আলম রাজু, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ মুক্ত গার্মেন্টস শ্রমিক ইউনিয়ন ফেডারেশন; নুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক, ইউনাইটেড ফেডারেশন অব গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স; মীর আবুল কালাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক, স্বাধীন বাংলা গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন; শহীদুল্লাহ বাদল, সভাপতি, বাংলাদেশ মেটাল, কেমিক্যাল, গার্মেন্টস ও দর্জি শ্রমিক ফেডারেশন; রুহুল আমীন, সভাপতি, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি ফেডারেশন; সালাউদ্দিন স্বপন, সভাপতি, বাংলাদেশ বিপ্লবী গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন; কামরুল হাসান, সাধারণ সম্পাদক, একতা গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন; চায়না রহমান, সাধারণ সম্পাদক, ফেডারেশন অব গার্মেন্ট ওয়ার্কার্স; মো. শাহাদাত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক, গার্মেন্টস টেইলার্স ওয়ার্কার্স লীগ; নাজমা আক্তার, সভাপতি, সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন; বাবুল আখতার, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ গার্মেন্টস এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল শ্রমিক ফেডারেশন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত