অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউন- এর কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগ্যানকে শুক্রবার দিবাগত রাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট।
জানা যায়, শুক্রবার দিবাগত রাতে পুলিশ ছাড়া আনসার নিয়ে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা দরজা ভেঙে আরিফুলের বাসায় ঢোকেন। এরপর তাকে মারধর শুরু করেন। পরে জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে নিয়ে ‘বিবস্ত্র' করে নির্যাতন করা হয়। তার ভিডিও ধারণ করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে কুড়িগ্রামে এমন ঘটনা ঘটেছে।
আরিফুলের স্ত্রী মোস্তারিমা সরদার নিতু ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘কেন আমার স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে আমরা জানি না। দরজা ভেঙে ৭/৮ জন বাসায় ঢোকে। এরপরই পেটাতে শুরু করে। কী অপরাধ জানতে চাইলে আরও বেশি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে টিনের বেড়া ভেঙে ওকে নিয়ে যায়। প্রথমে তো আমরা জানতামই না, কারা নিয়ে গেছে? ধরার সময় শুধু বলেছে, তুই অনেক জ্বালাইছিস। পরে আমি কারাগারে দেখা করি। তখন সে দাঁড়াতেই পারছিল না। আমাকে বলল, বিবস্ত্র করে পিটিয়েছে। দুটি কাগজেও স্বাক্ষর নিয়েছে।’’
আরিফুলকে আটক অভিযানে নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমা। তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘অভিযানের সময় তার কাছ থেকে আধা বোতল মদ ও দেড়শ গ্রাম গাঁজা পাওয়া গেছে। এই অপরাধ তিনি স্বীকার করায় তার এক বছরের জেল ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।'' তবে আরিফুলের স্ত্রী মোস্তারিমা এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘‘বাসাতে তারা কোন তল্লাশি করেনি।’’
শনিবার সকালে বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর সাংবাদিক মহল থেকে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, ‘‘আরিফুলের ওপর যদি অন্যায় হয়ে থাকে, তবে অবশ্যই জেলা প্রশাসককে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। মধ্যরাতে মোবাইল কোর্ট ও সাজা কোনও কিছুই আইনসম্মত নয়।’’
এরপরই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে রংপুরের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শনিবারই কমিটির সদস্যরা আরিফুলের স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন।
সূত্র: ডয়চে ভেলে
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ