শিরোনাম
১৬ এপ্রিল, ২০২০ ১৫:২১

পঞ্চগড়ে ত্রাণের জন্য হাহাকার

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

পঞ্চগড়ে ত্রাণের জন্য হাহাকার
পঞ্চগড়ে ত্রাণের জন্য শুরু হয়েছে হাহাকার। প্রতিদিন অনেক মানুষ ত্রাণের আশায় ভিড় করছেন সংশ্লিষ্টদের কাছে। ত্রাণের জন্য জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন অফিসে অবস্থান করছে দরিদ্র মানুষ। অনেকে মানববন্ধনও করছেন। এই সংকটের দিনে জনপ্রতিনিধিরাও খোঁজ নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তালিকাভুক্ত সবার কাছে এখনো ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব হয়নি বলে এই হাহাকার সৃষ্টি হয়েছে। 
 
দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে গতমাসে সারাদেশের মতো পঞ্চগড়েও শুরু হয় অঘোষিত লকডাউন। ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষ কর্মহীন ও বেকার হয়ে যায়। দরিদ্র মানুষেরা খাবারের সংকটে পড়ে। মানুষ হয়ে পড়ে ঘরবন্দি। এ অবস্থায় সরকার ঘরে ঘরে ত্রাণ পাঠানোর উদ্যোগ নেয়।
 
সরকারের নির্দেশনায় খাদ্য সংকটে পড়া মানুষের তালিকা তৈরি করতে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের কে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ভিজিডি কার্ড  এবং সরকারি অন্যান্য সহযোগিতাপ্রাপ্তদের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে তালিকাও প্রস্তুত করা হয়। এসব তালিকায় হাজার হাজার মানুষ বাদ পড়ে যায়। প্রত্যেক উপজেলায় অসংখ্য বেকার ও দরিদ্র্র মানুষ থাকলেও তালিকায় উঠে এসেছে অল্প সংখ্যক মানুষের নাম।
 
এদিকে তালিকাভুক্ত মানুষের মধ্যে অনেকের কাছেও এখনো ত্রাণ পৌঁছেনি। অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বাররা খোঁজ নিচ্ছেন না দরিদ্র মানুষের। ত্রাণের জন্য গত ৯ এপ্রিল শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে মানববন্ধন করে স্থানীয় কয়েকশ মানুষ। প্রতিনিয়ত জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ত্রাণের জন্য ভিড় করছেন হাজারো মানুষ। 
 
এদিকে একটি সূত্র জানায়, তেঁতুলিয়া উপজেলাতেই এখন প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক কর্মহীন বেকার হয়ে গেছে। অথচ ত্রাণের তালিকায় খাদ্য সহযোগিতা পাবেন মাত্র ১৩ হাজার মানুষ। অন্য উপজেলাগুলোতেও একই অবস্থা।
 
তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর এলাকার ডাক্তার পাড়া গ্রামের নজিবুল ইসলাম জানান, আমি মানুষের বাড়িতে কাঠ চেড়াই করি। এখন কাজ বন্ধ। আমাদের গ্রামে যাদের গোলায় ধান আছে তাদের বাড়িতেই চাল দেয়া হয়েছে। দরিদ্র মানুষের বাড়িতে চাল যায়নি। বৈরাগীগজ গ্রামের জবেদ আলী জানান, আমি মসজিদের মুয়াজ্জিন। চাল তুলেই আমাকে বেতন দেওয়া হতো। বর্তমানে বেতন নেই । কিন্তু সরকারি অনুদানও পাইনি।  
 
পঞ্চগড় পৌরসভায় প্রায় ৩০ হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। এই পৌরসভায় তালিকা অনুযায়ী খাবার পাবেন মাত্র ৮ হাজার মানুষ। ফলে অসংখ্য মানুষ ত্রাণের তালিকা থেকে বাদ পড়ে যাওয়ায় ত্রাণের জন্য হাহাকার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন পৌর মেয়র তৌহিদুল ইসলাম। 
 
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে,  উপজেলা প্রশাসন থেকে পাঠানো তালিকা অনুযায়ী খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।    জেলার পাঁচ উপজেলায় ৫৪ হাজার জন দরিদ্র্র কর্মহীন  মানুষের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তারা সবাই ত্রাণ পাবেন। 
 
জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন জানান, ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের  টেস্ট রিলিভ থেকে এই জেলায় ২৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ লক্ষ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় খাদ্য সংকটে রয়েছে এমন সকল মানুষের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এই কর্মসূচী অব্যাহত থাকবে।  
 
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর