৩০ মে, ২০২০ ২১:৪৮

ঐতিহ্যবাহী গোকর্ণ নওয়াব বাড়ির সামনের অংশ ধসে পড়েছে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ঐতিহ্যবাহী গোকর্ণ নওয়াব বাড়ির সামনের অংশ ধসে পড়েছে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ‘গোকর্ণ নওয়াব বাড়িটি’ ধসে পড়েছে। শনিবার সকালে ভারী বৃষ্টির কারণে ধসে পড়ে বাড়িটির সামনের দক্ষিণ দিকের পুরো অংশ। 

দীর্ঘদিন অযত্ন আর অবহেলায় কালের গর্ভে হারিয়ে যেতে বসেছে এই পুরার্কীতি বাড়িটি। 

বংশধর সৈয়দ রিয়াজ জানায়, সকালে ভারী বৃষ্টির কারণে ধসে পড়ে বাড়ির দক্ষিণ দিকের বারান্দাসহ পুরো অংশটি। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি। সংবাদ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমা আশরাফী বাড়িটি পরিদর্শন করেন। 

এসময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক ছোয়াব আহমেদ, সাবেক স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ নওশাদ উল্লাহ, স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার যে কয়টি ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে তার মধ্যে গোকর্ণ নবাব বাড়ি অন্যতম একটি স্থাপনা। কারুকার্য খচিত শতবর্ষী এই প্রাসাদটি নিমার্ণ করেন অবিভক্ত ভারতবর্ষের উজ্জ্বল নক্ষত্র মরহুম নওয়াব সৈয়দ সামসুল হুদা। পরবর্তীতে তার ছোট ভাই ব্যারিস্টার মাসিহ পারিবারিক ওই ভবনের তিন তলার ডিজাইনটি করে বাড়ির সৌন্দর্য্য আরও বাড়িয়ে তুলেন। অনেক দূর থেকেই এই বাড়ির উচ্চ চুড়া এখনো মনকাড়ে আগতদের। ভিতর বাড়িতে বাংলো টাইপের দালান, রং মহল, চাতাল সব যখন নীরবে স্বজনহারা ব্যথায় কাদঁছে ঠিক তখনই ধসে পড়েছে বাড়িটি সামনের পুরো অংশ। 

সময়ের ব্যবধানে ধ্বংশের প্রহর গুনলেও আজও একাংশ ঠাঁয় দাঁড়িয়ে জানান দিচ্ছে নবাব বাড়ির সেকালের বিত্ত-বৈভবের কথা। নীরবে নিঃস্বার্থভাবে দান করে যাওয়া এ বংশের পুরোনো ঐতিহ্যটি আজ ধ্বংশের দ্বারেপ্রান্তে। 

নবাব শামসুল হুদা নিঃসন্তান ছিলেন। উনার মাধ্যমেই উনার বংশের প্রদীপ নিভে যায়! তবে সরাসরি উনার বংশধর না থাকলেও উনার দাদা ও দাদার ভাইদের মাধ্যমে সৈয়দ বংশের বা উনার বংশ সিলসিলা আজও গোকর্ণে জারি আছে।

সাবেক স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গোকর্ণ গ্রামের সন্তান সৈয়দ নওশাদ উল্লাহ বলেন, ঐতিহ্য ধরে রাখতে দ্রুত নওয়াব বাড়িটি সংস্কার করা প্রয়োজন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক ছোয়াব আহমেদ জানান, ধসে পড়ার সংবাদ পেয়ে ছুটে আসি। উপজেলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে দ্রুত নওয়াব বাড়িটি সংস্কারের জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমা আশরাফী বলেন, ঘটনা জানার পরপর নওয়াব বাড়িটি পরিদর্শনে এসেছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও প্রত্নতত্ত অধিদফতরকে জানানো হবে।  

বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর