পাবনার কাজিরহাট-আরিচা নৌপথে চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদের হুমকির মুখে স্পিডবোট চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। প্রতি দিন কাজিরহাট আরিচা নৌ পথে ২০টি স্পিডবোট চলাচল করে। এর মধ্যে নয়টি কাজিরহাট এবং ১১টি আরিচা এলাকার। যা বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী বাহিনী স্পিডবোট বন্ধ করে দেওয়ায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। কাজিরহাট ঘাট স্পিডবোট মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, পাবনার কাজিরহাট ঘাট দিয়ে খুব সহজে পাবনা, নাটোর, রাজশাহীসহ আশে পাশের বেশ কিছু জেলার মানুষ রাজধানী ঢাকায় যাতায়াত করে আসছে। আর এই নৌপথের সহজ মাধ্যম আধুনিক ও সময় উপযোগী জনপ্রিয় বাহন স্পিডবোট। স্পিডবোট মালিকরা দীর্ঘদিন ধরে সরকারি নিয়ম অনুসরণ করে সুনামের সাথে কাজিরহাট-আরিচা নৌপথে স্পিডবোট পরিচালনা করেছে। কিন্তু স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী বাহিনী ঘাট এলাকায় প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে স্পিডবোট কাউন্টারে হামলা চালিয়ে চাঁদার দাবি করে। চাঁদা না পেয়ে সন্ত্রাসীরা স্পিডবোট চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।
কাজিরহাট স্পিডবোট মালিক সমিতিরি আহবায়ক মো. রেজাউল হব বাবু জানান, ঘাট সংলগ্ন স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক ইউপি চেয়ারম্যান এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। তার নির্দেশে সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ নাসির সদরদার, রাশেদ সরদার, রেজাউল ইসলাম বকুল, খোকন ফকির স্বপন শেখ, শাহীন মন্ডল, মো. জানু, মো. রানা, শাহাজান আলী, সোহেল সরদার, আকরাম ফকির ও মো. আক্কাসসহ একদল সন্ত্রাসী বাহিনী ঘাট এলাকায় দখল নিয়ে ব্যাপক ভাবে চাঁদাবাজি করছে।
সম্প্রতি সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের চাঁদা দেয়া বন্ধ করে দিলে তারা কাজিরহাট-আরিচা নৌপথে স্পিডবোট চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। ঘাট দখলকে কেন্দ্র করে এলাকায় উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোন সময় আইন শৃঙ্খলার বিঘ্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি জানান, সন্ত্রাসীদের কর্মকান্ডে ঘাটের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। স্থানীয় ঢালারচর ইউপি চেয়ারম্যান কোরবান সরদার ও বেড়া পৌর মেয়র আব্দুল বাতেন ঘাট এলাকা তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার জন্য সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে স্পিডবোট মালিকদের নানাভাবে হয়রানি করছে।
বেড়া পৌর মেয়র আব্দুল বাতেন ও ঢালারচর ইউপি চেয়ারম্যান কোরবান সরদার তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কাজিরহাট-আরিচা নৌপথে স্পিডবোট চলাচল বন্ধ হয়নি। আমাদের স্পিডবোট গুলোতো চলছে। কতিপয় ব্যক্তি ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে এবং রাজনৈতিক বিরোধে স্পিডবোট মালিক সমিতির নাম ব্যবহার করে প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস জানান, স্থানীয় স্পিডবোট মালিকদের দ্বন্দ্বের কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বর্তমানে ঘাট এলাকায় কোন উত্তেজনা বা আইন শৃঙ্খলার বিঘ্ন হওয়ার আশঙ্কা নাই।
পাবনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ জানান, অভিযোগ পেয়েছি, বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন