লালমনিরহাটে তিস্তা-ধরলা নদীর পানি আবারও বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সকাল থেকেই তিস্তা বিপদ সীমার ১৫ সেন্টিমিটার ও ধরলার বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে অব্যাহতভাবে পানি বাড়ার কারনে তিস্তা মধ্যবর্তী চর এলাকার লোকজনকে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার নির্দেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শুক্রবার রাত থেকে পানি বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। শনিবার রাতেও পানি বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার অতিক্রম করে । সেই কারণেই নদীর চরাঞ্চলের মানুষকে নিরাপদ স্থানে যেতে বলা হয়েছে। তবে রবিবার সকাল থেকে পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। পানি কমে তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে পানির বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে পানির ব্যারেজ পয়েন্টে একটুও কমলেও ভাটিতে পানি ফুলে ফেপে উঠে লেকালয়ে প্রবেশ করে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ৬০ হাজার মানুষ। ৪র্থ দফা বন্যার কারনে এসব এলাকায় দেখা দিয়ে চরম খাদ্য সংকট, বিশুদ্ধ পানির অভাবে ছড়িয়ে পড়ছে নানা রোগব্যাধি।তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্ধুর্ণা, গড্ডিমারী, ডাউয়াবাড়ি এবং পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের প্রায় ৬০ হাজারের অধিক মানুষ আবারও পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে এসব এলাকার চরাঞ্চল ও নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার উপক্রম হয়েছে বহু কাঁচা-পাকা সড়কে পানি উঠে পড়ায়।
এছাড়া তিস্তা-ধরলার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সৃষ্ট বন্যায় চরাঞ্চলের সবজি, বাদামসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা। অনেক মৎস্য খামারের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। ফসলের ক্ষেত বন্যার পানিতে ডুবে গিয়ে ফসলহানীর শঙ্কায় চিন্তিত কৃষকরা। তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের পানিবন্দি পরিবারগুলো শিশু-বৃদ্ধ ও গবাদি পশুপাখি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকআবু জাফর জানান, ত্রাণ পর্যাপ্ত থাকায় প্রতিদিনেই ত্রাণ দেয়া অব্যাহত আছে। আমরা এই বিষয়ে তৎপর আছি।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ