শিরোনাম
১২ জুলাই, ২০২০ ১৩:২৬

চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্থানীয়ভাবেই মিটবে কোরবানির পশুর চাহিদা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্থানীয়ভাবেই মিটবে কোরবানির পশুর চাহিদা

কোরবানির  ঈদকে সামনে রেখে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৯৮ হাজার ৭৬৯টি কোরবানিযাগ্য পশু প্রস্তুত করা রয়েছে। খামার ও পারিবারিকভাবে কোরবানির জন্য এসব পশু প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে হৃষ্ট-পুষ্টকরণ করা হয়েছে। প্রাণী সম্পদ বিভাগ বলছে, এবার জেলায় কোরবানির পশুর সংকট হবে না। এছাড়া স্থানীয়ভাবে চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত কোরবানির পশু মজুদ থাকায় দামেও প্রভাব পড়বে না। 

তবে করোনাকালে মানুষের হাতে টাকা না থাকায় এ বছরের ঈদুল আযহায় কোরবানির দেয়ার পরিমাণ কমতে পারে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। 

জেলার পশু হাটগুলোতে দেখা গেছে, কোরবানি ঈদের সময় আর মাত্র ১৮ দিন বাকি থাকলেও এখন পর্যন্ত পশুর হাটগুলোতে গরু এবং ব্যাপারীদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবারের ঈদুল আযহায় কোরবানি পশুর চাহিদা রয়েছে প্রায় ৯২ হাজার গরু-মহিষ ও ছাগলের। আর জেলার ৫ উপজেলায় ছোট বড় ও পরিবারিকভাবে মিলিয়ে ১২ হাজার ৬২৪টি খামারে ৯৮ হাজার ৭৬৯টি গবাদিপশু প্রস্তুত করা হয়েছে। যার মধ্যে, ষাঁড় রয়েছে ২৩ হাজার ৩৮৭টি, বলদ রয়েছে ১৭ হাজার ৫০২টি, গাভী রয়েছে ১৩ হাজার ৯৫২টি, মহিষ রয়েছে ৩ হাজার ৪০৬টি, ছাগল রয়েছে ২৯ হাজার ২৪৩টি এবং ভেড়া ও গাড়ল রয়েছে ১১ হাজার ২৭৯টি। 

কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে প্রতি বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জের খামারিরা গরু ও ছাগল পালন করে আসছেন। খামারিরা বলছেন, প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে হৃষ্ট-পুষ্টকরণ করা হচ্ছে এসব গরু। ক্ষতিকর স্টরয়েড জাতীয় ট্যাবলেট বা ইনজেকশন ব্যবহার করেন না তারা। প্রাকৃতিক ও পুষ্টিকর খাবার দিয়ে থাকেন তারা। তাদের মতে, এ খাতের  প্রতি সরকার নজর দিলে ভারত থেকে থেকে গরু আনার আর প্রয়োজন পড়বে না। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার নামোনিমগাছি এলাকার গরুর খামারি ইকবাল হোসেন জানান, নিয়মিত খাবারের মাধ্যমে স্বাস্থ্য-সম্মতভাবে গরু পালন করা হয়। তার খামারে ৪৮টি গরু রয়েছে, যার দাম সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা এবং সর্বনিম্ন ৭৫ হাজার টাকা। তবে এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে কোরবানির পশু কম বিক্রির আশঙ্কা করছেন তিনি। 

অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার বটতলাহাটের ইজারাদার মোঃ মনিরুল ইসলাম জানান, বিগত বছরগুলোতে কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে এসময় গরু ও ছাগল বেচাকেনা শুরু হয়ে যায়। এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে গত শুক্রবার হাটে প্রায় ৫’শ গরু-ছাগল নেমেছিল। ক্রেতারা তেমন না আসায় বেচাকেনা হয়েছে একেবারেই কম। তিনি আরও বলেন, হাটে গরু-ছাগল বিক্রি কম থাকায় এবার অনেক টাকা লোকসান গুণতে হবে। 

এদিকে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ ডা. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, খামারিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে স্থানীয়ভাবে গবাদি পশু পালনের জন্য। প্রতিনিয়ত খামারিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হয়। এবার জেলায় লালন-পালন করা এসব পশু দিয়েই কোরবানির চাহিদা পূরণ হবে। 

অন্যদিকে সীমান্তে বিজিবি ভারতীয় গরু-মহিষ প্রবেশ রোধে জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয়সভা করে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহন করার পর সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধি করেছে বিজিবি, ফলে এবার ভারত থেকে গরু না আসার সম্বাবনা রয়েছে, এতে করে লাভবান হবেন জেলার পশু ব্যবসায়ীরা। 

এদিকে ৫৩ বিজিবি’র অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোহাম্মদ সুরুজ মিয়া জানান, কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে গরু চোরাচালানিরা সক্রিয় হয়ে উঠে। এবার চোরাচালান রোধে জেলার বিভিন্ন সীমান্তে কঠোর নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়াও গরু চোরাচালানীদের চিহ্নিত করে স্থানীয় বিওপিতে তাদের নিয়মিত হাজিরার ব্যবস্থা করায় তারাও এবার গরু চোরাচালান করতে সাহস পাচ্ছে না। ফলে দেশীয় গরু উৎপাদনে খামারিরা আগামীতে আরও উৎসাহিত হবে বলে মনে করেন তিনি।   


বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর