শিরোনাম
৫ আগস্ট, ২০২০ ২৩:৩১

ফতুল্লায় বন্যার পানি ঢুকে ভবন ধস, তলিয়ে গেছে ১৫০ বাড়ি

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

ফতুল্লায় বন্যার পানি ঢুকে ভবন ধস, তলিয়ে গেছে ১৫০ বাড়ি

নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লার ধর্মগঞ্জ এলাকায় রাস্তা ভেঙে বুড়িগঙ্গা নদীর পানি প্রবেশ করে একটি একতলা ভবন ধসে গেছে। এছাড়াও তলিয়ে গেছে প্রায় ১৫০টি বাড়ি। ওই এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর পানি প্রবেশে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।

অন্যদিকে শহরের ওপার বন্দর এলাকায় শীতলক্ষার পানিতে পার্শ্ববর্তী বাজার তলিয়ে গেছে। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে সাধারণ মানুষ জেলায় বন্যার আশংকায় আতংকে রয়েছে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ফতুল্লার ধর্মগঞ্জ এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর পানি তীব্র স্রোত এসে একটি একতলা ভবনে আছড়ে পড়ে। এতে মুহূর্তের মধ্যে পুরো একতলা ভবনটি ধসে যায়। তবে ঘরে থাকা বাসিন্দরা কোন রকম জীবন বাঁচাতে সক্ষম হয়েছে। 

বিধ্বস্ত বাড়ির বিষয়ে শহরের অক্টোফিস এলাকার লন্ড্রিম্যান মিঠু জানান, আমার সমন্ধি রতন দেড় বছর আগে মারা গেছে। এখন ধর্মগঞ্জে যে বাড়িটি ধসে পড়েছে সেখানে মৃত রতনের স্ত্রী লাখি ও তার দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করছিল। মঙ্গলবার রাতে ধর্মগঞ্জ বুড়িগঙ্গা সংলগ্ন ২০ ফুট রাস্তাটি নদীর পানির চাপে ভেঙে যায়। ওই সময় পানি স্রোতে ধসে যাওয়া বাড়িটির পাশে থাকা একটি গলি রাস্তা দিয়ে তীব্র গতিতে প্রবাহিত হতে থাকে। ওই সময় ওই রাস্তায় মাটি ও বাড়ির নীচে বালু সরে গিয়ে বাড়িটি মুহূর্তের মধ্যে ধসে পড়ে। লাখি এ ঘটনা আঁচ করতে পেরে আগেভাগেই বাড়ি থেকে বের হয়ে গিয়েছিল। 

তিনি আরো জানান, বাড়ি ভেঙে যাওয়ায় এখন লাখি ও তার দুই সন্তানকে আমার ফতুল্লার মাসদাইর শেরে বাংলা সড়কে বাস ভবনে আশ্রয় দিয়েছি।

অন্যদিকে শহর ওপার বন্দর এলাকায় শীতলক্ষা পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদীর পাড়ে থাকা একটি ক্ষুদ্র বাজার তলিয়ে গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শীতলক্ষার পানিতে তলিয়ে যাওয়া ছবিটি পোস্ট করেছেন শহরের করোনাকালে মানবতার কাউন্সিলর শকু। 

এ বিষয়ে নাসিকের কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু জানান, ১ নং কেন্দ্রীয় লঞ্চ ঘাটের ওপার বন্দর এলাকায় নদীর পার হয়ে উঁচুতে যে বাজার রয়েছে সেখানে পানি উঠে গেছে। আশংকা করছি নদীর পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে দুই দিন এভাবে বাড়তে থাকলে শহর বন্যা কবলিত হতে পারে। 

তিনি আরো জানান, বন্যার আগাম প্রস্তুতি হিসেবে জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশনসহ সকল জনপ্রতিনিধিরা সজাগ রয়েছে। আমরা ইনশাআল্লাহ যে কোন দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছি।

এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা বারিক জানান, ঘটনার পরেই বুধবার বিকালেই বুড়িগঙ্গা পানিতে প্লাবিত ১৫ টি পরিবারের খোঁজ খবর নিয়ে ও সরেজমিন ঘুরে দেখে এসেছি। তাদেরকে আশ্বাস দিয়েছি। সরকারের পক্ষ থেকে যে কোনো সহায়তা করা হবে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক জসিমউদ্দিন জানান, ঘটনার পরই সদর ইউএনওকে প্লাবিত এলাকায় পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরো জানান, আগাম বন্যার আশংকায় আমরা ঈদের আগেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি জেলা বন্যা নিয়ন্ত্রণ কমিটি প্রস্তুতি মূলক মিটিং করেছি। সেখানে জেলার প্রত্যেকটি থানার প্রত্যেকিট ইউনিয়নে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ প্রশাসন, ত্রাণ টিম ও মেডিকেল টিম বিশেষ করে বন্যায় পানি বাহিত রোগী বেশী হয় সে বিষয়ে আগাম প্রস্তুতি রেখেছি। মূলত নারায়ণগঞ্জে আগাম বন্যার সকল প্রস্তুতি রয়েছে জেলা প্রশাসনের।


বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর