২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ১২:৩২

কুষ্টিয়ায় অসহযোগিতার দায়ে ২৬১ চালকল কালো তালিকায়

পূরণ হয়নি চাল সংগ্রহ অভিযানের লক্ষ

জহুরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া

কুষ্টিয়ায় অসহযোগিতার দায়ে ২৬১ চালকল কালো তালিকায়

ফাইল ছবি

চালকল মালিকদের অসহযোগিতার কারণে কুষ্টিয়ায় বোরো মৌসুমে সরকারের চাল সংগ্রহ অভিযানের লক্ষমাত্রা পূর্ণ হয়নি। খাদ্য বিভাগের সাথে চুক্তি করেও এ মৌসুমে সরকারি গুদামে চাল সরবরাহ করেনি অনেক চালকল মালিক। এ কারণে জেলার ২৬১ চালকলকে কালো তালিকাভুক্তি করা হচ্ছে। পাশাপাশি এসব মিলের জামানত বাজেয়াপ্ত, প্রনোদনা বাতিল ও আগামী দুই মৌসুম চাল সরবরাহ থেকে চুক্তির বাইরে রাখার মত পদক্ষেপ গ্রহণ করছে খাদ্য বিভাগ। 

জেলায় চলতি বোরো মৌসুমে প্রতি কেজি ৩৬ টাকা দরে ৩৪ হাজার মেট্রিক টন মোটা চাল কেনার লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সেখানে সময় বাড়িয়েও সংগ্রহ হয়েছে ২২ হাজার মেট্রিক টনের কিছু বেশি।

জানা গেছে, জেলায় অটো ও হাসকিং মিলিয়ে চালকল রয়েছে ৫৩৫টি। এর মধ্যে অটো চালকলের সংখ্যা ৪৯টি। আপদকালিন মজুদের লক্ষ্যে চলতি মৌসুমে সরকার নির্ধারিত মূল্যে এসব চালকল থেকে চাল কেনার চুক্তি করে স্থানীয় খাদ্য বিভাগ। তবে চুক্তিভঙ্গ করে এবার ২৫৮টি হাসকিং (ম্যানুয়াল) ও ৩টি অটো রাইস মিল এক ছটাক চালও সরবরাহ করেনি। ১২টি মিল আশিংক সরবরাহ করেছে। তবে ২৬৫টি চালকল পুরো চাল সরবরাহ করেছে। 

জেলা খাদ্য অফিস সূত্র জানিয়েছে, লক্ষমাত্রার ৩৪ হাজার মেট্রিক টনের বিপরিতে সংগ্রহ হয়েছে ২২ হাজার মেট্রিক টনের সামান্য কিছু বেশি। 

এদিকে, চুক্তি করেও চাল না দেওয়ার অভিযোগে জেলার ২৬১ চালকলকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে খাদ্র বিভাগ। পাশাপাশি এসব মিলের জামানত বাজেয়াপ্ত, প্রনোদনা বাতিল ও আগামী দুই মৌসুম চাল সরবরাহ থেকে চুক্তির বাইরে রাখার মত পদক্ষেপ গ্রহণ করছে খাদ্য বিভাগ।

তবে কুষ্টিয়া জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন বলেন, এ বছর দেশে প্রচুর ধান উৎপাদনের পরেও ধানের বাজার বেড়ে যায়। আর বোরো মৌসুমে মোটা ধানের উৎপাদন হয় একেবারেই কম। এ কারণে সরকার নির্ধারিত দরের তুলনায় চালের উৎপাদন খরচা বেশি পড়ে গেছে। এ কারণে মিল মালিকরা কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা লোকসান দিয়েও চাল সরবরাহ করেছে। তবে যারা চুক্তি করে চাল দিতে ব্যর্থ হয়েছে তাদের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার আগে ভাবলে ভাল হয়। ছোট মিলাররা এমনিতেই দেউলিয়া হয়ে গেছে, তার ওপর কড়া পদক্ষেপ নিলে তারা আর উঠে দাঁড়াতে পারবে না।

বাংলাদেশ অটো মেজর এন্ড হাসকিং মিল মালিকদের কেন্দ্রীয় সংগঠনের সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, ‘বোরো যারা লোকসানে চাল দিয়েছে তাদেরকে আগামীতে বাড়তি সুবিধা দিতে হবে। কারণ যারা লাভের সময় চাল দিবে আর লোকসানের সময় দেবে না তাদের বিষয়ে কি পদক্ষেপ নেবে তা সরকারের বিষয়। 

জেলা খাদ্য কর্মকর্তা তাহসিনুল হক বলেন, ‘যারা চুক্তি করেও চাল দেয়নি তাদের তালিকা করা হয়েছে। কি কারণে চাল দিতে পারেনি তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আইন অনুযায়ী এসব মিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাশাপাশি সরকার আরো কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়টি ভাবছে। পাশাপাশি যারা লোকসানে চাল দিয়েছে তাদের সুবিধা দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে মন্ত্রণালয়।’ 


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর