বগুড়ার ধুনট উপজেলার কালেরপাড়া ইউনিয়নের মাদারভিটা গ্রামের ইছামতি নদীতে ব্রিজ না থাকায় কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তবে শুষ্ক মৌসুমে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে লোকজন যাতায়াত করলেও বর্ষা মৌসুমে ভোগান্তি আরও বেড়ে গেছে।
জানা গেছে, উপজেলার কালেরপাড়া ইউনিয়নের বুক চিরে বয়ে গেছে ইছামতী নদী। নদীর পশ্চিমপাড়ে পারধুনট ও পূর্ব পাড়ে গড়ে উঠেছে মারভিটা গ্রাম। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী ঘুঘরাপাড়া, মাদার ভিটা ও পারুলকান্দি গ্রামে যাতায়াতের জন্য প্রতিদিন হাজারো লোকজনকে এই নদী পারাপার হয়ে গন্তেব্যে পৌঁছাতে হয়।
নদীতে ব্রিজ না থাকায় কৃষি কাজে আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে চাষাবাদ করা, শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াতসহ অসুস্থ ব্যক্তিদের চিকিৎসা সেবা নিতেও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
যুগযুগ ওই সকল গ্রামের লোকজনকে প্রয়োজনে বা অপ্রয়োজনে নদীর পশ্চিম পাশে আসতে হলে হয়তোবা তাদের ভিজে অথবা ১০ কিলোমিটার ঘুরে গিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়।
মাদারভিটা গ্রামের বাসিন্দা আলী আরমান রকি জানান, শুষ্ক মৌসুমে লোকজন স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে যাতায়াত করলেও বর্ষা মৌসুমে ভোগান্তি আরও বেড়ে যায়। কোনো কোনো সময় নৌকা পাওয়া যায়, আবারও কোনো সময় নদী সাঁতরেও লোকজনদের পারাপার হতে হয়। এছাড়া নদীর পশ্চিম পার্শ্বে রয়েছে পারধুনট ও ঘুঘরাপড়া গ্রাম। ওই দুটি গ্রামের মানুষের অধিকাংশ ফসলি জমিই রয়েছে নদীর পূর্ব পাশে।
কিন্তু নদীতে ব্রিজ না থাকায় ওই ফসলি জমিগুলোতে আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে চাষাবাদ করতে না পারায় এবং উৎপাদিত ফসল ঠিক মতো ঘরে তুলতে না পারায় কৃষকদের প্রতি বছরই লোকসান গুনতে হচ্ছে। কয়েক মাস আগে স্থানীয় এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে যাতায়াত করলেও সম্প্রতি ভারী বর্ষণে ও বন্যার পানিতে সেই বাঁশের সাঁকো নদীত ভেসে গেছে।
তাই বর্তমানে একটি মাত্র ছোট নৌকা ভাড়া করে নিয়ে এসে প্রতিদিন প্রায় ৪-৫টি গ্রামের হাজারের লোকজন যাতায়াত করে আসছে। স্থানীয় এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে এই নদীতে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন।
পারধুনট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী কল্পনা খাতুন ও রোকসানা খাতুন জানায়, নদীতে ব্রিজ না থাকায় তারা সময়মত স্কুলে যেতে পারে না। সারা বছরই কষ্ট করে নদী পার হয়ে স্কুলে যেতে হয়। শুষ্ক মৌসুমে হাঁটু পানি পার হয়ে স্কুলে যেতে হয়। আর বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলেই যাতায়াতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়।
বগুড়ার ধুনট উপজেলা প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম জানান, যে সকল নদীতে ব্রিজ নির্মাণের প্রয়োজন, এমন তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি আগামীতে ওই নদীতে ব্রিজ নির্মাণের জন্য বরাদ্দ পাওয়া যাবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই