হিমালয় কন্যা খ্যাত উত্তরের সীমান্ত জেলা পঞ্চগড়ে এখন বিরাজ করছে দারুণ উপভোগ্য শীত। গোধূলি জুড়ে পশ্চিমের সারা আকাশ হয়ে উঠছে লাল। সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত লাল আভা ছড়িয়ে থাকছে। আর সূর্য ডোবার পর পরেই শরীরে ঠান্ডা আবহাওয়া বিরাজ করছে। খুব বেশি নয়। হালকা কাপড় পড়লেই আধো শীত আর মধুর গরম অনুভূতি মনকে শান্ত করে দেয়।
হেমন্ত কালের বর্ণে বর্ণিল প্রকৃতি। চলছে ধান কাটার উৎসব। দিগন্ত বিস্তৃত জুড়ে পড়ে আছে হলুদ রঙের ধান আর ধান। যেন কাঁচা সোনার রঙ লেগেছে ফসলের মাঠে। কৃষকের আঙিনা জুড়ে ধানের ঢিবি। আপাতত ক্ষেত থেকে ধান কেটে নিয়ে আসছেন তারা। কয়েকদিন পড়েই শুরু হবে মাড়াই।
সবজি চাষিরা ব্যস্ত সবজি উৎপাদনে। এই এলাকার সবজি সারা দেশে রফতানি হয়। গত কয়েকদিন থেকে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নির্ণয় হলেও সহনীয় এবং উপভোগ্য এই শীতে এখনো গরম কাপড় বের করেননি জেলার অধিবাসীরা।
ভোর বেলা হালকা কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ে সবকিছু। ঘাসের পাতায় জমে থাকে শিশির। তারপরেই দেখা মেলে লাল সূর্যের। কাঁচা সোনারোদ মাখা হেমন্তের সকাল। মিষ্টি রোদ পোহায় গ্রামের মানুষ।
আস্তে আস্তে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। সোনালী রোদে মাখামাখি দিন শুরু হয়। এই রোদও উপভোগ্য হয়ে ওঠে। মেঘের ঘোরাফেরা নেই। সারাদিন আকাশ নীল হয়ে থাকে।
করোনা সংকটের দিনে স্কুল কলেজ বন্ধ। তাই হালকা শীতে আনন্দে আছে শিশুরা। তারা নানা-মামার বাড়িতে যাওয়া শুরু করেছে। শীতের পিঠা উৎসবে যোগদান করবে তারা।
আকাশ পরিষ্কার থাকলে দেখা মিলছে কাঞ্চনজঙ্ঘার। অপরুপ কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে দেখতে সকালের চা নাস্তা সেরে ফেলছে সবাই। সারাদেশ থেকে দেখতে আসছে হাজারো পর্যটক। তারা শীত উপভোগ করতে করতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সমতলের চা বাগান মুগ্ধ করছে তাদের।
স্থানীয়রা বলছেন গত বছর নভেম্বরেই ঘন কুয়াশা এবং তীব্র শীত জাপটে ধরেছিল। কিন্তু এবার এখনো সেরকম শীত আসেনি। পরিবেশ কর্মী মোস্তাফিজুর রহমান এটম বলেন, শীতের শুরুটা এবারে অন্যরকম। দারুণ উপভোগ্য। হয়তো আর কিছুদিন পরেই জাপটে ধরবে কড়া শীত।
ঢাকার ধানমণ্ডি থেকে আসা পর্যটক মামুন হোসেন জানান, শুনেছিলাম খুব শীত। কিন্তু না। এখানে শীতটা বেশ মজার। হালকা কাপড় গায়ে দিলে বেশ অনুভূতি আসে। সকালে চারদিকে রোদ ছড়িয়ে পড়ে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এখনো পুরো শীত পড়েনি। এ মাসের শেষের দিকে কড়া শীত পড়া শুরু হতে পারে। ডিসেম্বর-জানুয়ারি শীতের মৌসুম। তখন শীত মারাত্মক আকার ধারণ করবে। ঠান্ডায় জুবু-থুবু হয়ে যাবে সবকিছু। এক খন্ড শীতের কাপড়ের জন্য কাতড়াতে থাকবে এই এলাকার দরিদ্র শীতার্ত মানুষ।
বিডি প্রতিদিন/এমআই