শিরোনাম
- উইম্বলডনে আলকারাজকে হারিয়ে ইতিহাস গড়লেন সিনার
- লঙ্কানদের বড় ব্যবধানে হারিয়ে সমতায় ফিরল টাইগাররা
- কর্নেল ইভাল হত্যা: রুশ গুপ্তচরদের হত্যা করল ইউক্রেন
- শেষ মুহূর্তের গোলে নেপালকে হারাল বাংলাদেশ
- ঝিনাইগাতীতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল তিন মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর
- সংস্কার কমিশন মানুষের মনের ভাষা বুঝবে না : আমীর খসরু
- নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি গ্রেফতার
- সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে রাজধানীতে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল
- লিটন-শামীমের ব্যাটে বাংলাদেশের লড়াকু সংগ্রহ
- ৯ টাকার ওষুধ ৮০ টাকায় বিক্রি, জরিমানা ৫০ হাজার
- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের গ্রাফিতি প্রতিযোগিতা
- সারাদেশে বিশেষ পুলিশি অভিযানে গ্রেফতার ১৫৬৮
- ত্রিদেশীয় সিরিজ: ফিন অ্যালেনের চোটে কপাল খুলল কনওয়ের
- শিরোনামহীনের নতুন গান ‘কতদূর’
- নেপালের বিপক্ষে ২ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে বাংলাদেশ
- যশোরে ১১ স্বর্ণের বারসহ আটক ৩
- ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে রাতে মুখোমুখি পিএসজি-চেলসি
- কর্মস্থলে অনুপস্থিত আরও ৪ পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত
- এক ওভারে ৬ ছক্কা! রেকর্ড তালিকায় বুলগেরিয়ার মানান বশির
- বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজের টিকিটের মূল্য তালিকা প্রকাশ
রায়পুরে ঋণের জালে বন্দী মেঘনাপাড়ের জেলেরা
মো. মোস্তফা কামাল, রায়পুর
অনলাইন ভার্সন

লক্ষীপুরের রায়পুরের উপকূলীয় এলাকার বেড়ি বাঁধের দুই পাশে আশ্রয় নিয়েছে কয়েক’শ পরিবার। তাদের প্রায় সবাই একাধিকবার মেঘনা নদীর ভাঙনের শিকার।
কোনোরকম ঝুপড়ি তুলে আশ্রয় নিয়েছেন বেড়ি বাঁধের পাশে। তারমধ্যে ঋণ পরিশোধের চিন্তায় জীবনটা একেবারেই ফিকে হয়ে গেছে। আফসোসের সুরে ক্ষোভ নিয়েই কথাগুলো জানালেন, উপজেলার উপকূলীয় মেঘনা পাড়ের বাসিন্দা হিরন মাঝি।
তিনি জানান, এক সময় ঘর-বাড়ি হালের বলদ থাকলেও এখন আর কিছুই নেই। চারবার ঘর ভেঙেছে সর্বনাশা মেঘনা নদী। তিন ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে তাদের অভাবের সংসার। নদীতে মাছ ধরাই একমাত্র পেশা। অভাব অনটনের কারণেই স্থানীয় এনজিও থেকে ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছেন। নদীতে জালে ইলিশ ধরা না পড়ায় ঋণ শোধ করতে গিয়ে এখন ঠিকমতো দুই বেলা খাবার জোটে না।
বেসরকারি সংস্থা এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে উপজেলার গজারিয়া গ্রামের রিপন বকাউল দুঃখ করে বলেন ‘মা ইলিশ নিধনের’ নিষেধাজ্ঞার পরে আশা-ভরসা নিয়ে নদীতে মাছ ধরতে যাই। কিন্তু মাছ ধরা না পড়ায় ছেলে মেয়ে নিয়ে চরম দুঃখ কষ্টে রয়েছি। সংসার চালাতে গিয়ে বাধ্য হয়ে এনজিও থেকে ঋণ নিতে হয়েছে। এক এনজিও’র ঋণ পরিশোধ করতে করতে অন্য এনজিও থেকে ঋণ নিতে হয়। কিন্তু ঋণের বোঝা আর মাথা থেকে নামে না।
শুধু হিরন মাঝি ও রিপন বকাউল নয়, জেলেপাড়ার প্রায় সব পরিবারের ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে আরো বেশি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। সহায় সম্বল হারিয়ে বেড়ি বাঁধের পাশে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন।
বাঁধের উপর আশ্রয় নেওয়া জসিম, তাছলিমা, রোকেয়া, ইউনুছ, মানিক ও শরিফসহ অনেকেরই একই অবস্থা। সম্প্রতি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ও জেলে পল্লি ঘুরে এমন তথ্য জানা গেছে।
যারা বেড়ি বাঁধের দুই পাশে আশ্রয় নিয়েছেন স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও স্যানিটেশনসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত এমন প্রায় দেড় হাজার মানুষের বসতি এখানে। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে সাময়িকভাবে উপকৃত হলেও ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাতে হয় তাদের। বাধ্য হয়ে ভিটেমাটি ও আসবাবপত্র পর্যন্ত বিক্রি করতে হয়।
এদিকে, খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জালিয়ারচর, চরবংশী, চরলক্ষী, বাবুর চর, মেঘনা বাজার, মিয়ারহাট, পুরান বেড়ি ও চর কাচিয়া এলাকার প্রায় ৮০ শতাংশ লোক নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন।
কয়েকজন জেলের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জেলেরা একবারেই হতদরিদ্র। মাছ ধরার জন্য জাল, নৌকা ও ইঞ্জিন চালিত ট্রলার কেনার জন্য আড়তদার ও মহাজনদের কাছ থেকে প্রতি বছর ঋণ নেন জেলেরা। দাদন নেওয়া জেলেরা নির্ধারিত আড়তেই মাছ বিক্রি করতে হয়।
মেঘনা বাজারের জেলে নুরু খালাসি বলেন, আড়তদারেরা প্রথমে মাছ, এরপর নগদ টাকা কেটে নেন। মাছ বিক্রির অর্ধেক টাকা দাদন ব্যবসায়ীদের কাছে চলে যায়। এ কারণে দিনরাত পরিশ্রম করেও তাদের সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকে।
উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, আমরা শত চেষ্টা করেও জেলেদের দাদন ব্যবসা থেকে দূরে রাখতে পারিনি। সরকারিভাবে জেলেদেরকে বিনা সুদে ঋণের ব্যবস্থা করা হলে হয়তো দাদন ব্যবসা বন্ধ হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই
এই বিভাগের আরও খবর