আজ ১৮ ডিসেম্বর, রাজবাড়ী মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্থানি হানাদার বাহিনীর দোসর অবাঙালি বিহারিদের কবল থেকে মুক্ত হয় রাজবাড়ী। বিজয় দিবসের দুইদিন পর বিহারিদের কবল থেকে রাজবাড়ী মুক্ত হওয়ার পর এই দিনটিকে রাজবাড়ী মুক্ত দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
রাজবাড়ীতে পাকিস্থানিদের দোসর বিহারিরা ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বরের পর থেকে তৎপর হয়ে ওঠে। সারা দেশ মুক্ত হলেও রাজবাড়ী তাদের দখলে থাকবে- এই ভেবে তারা পুরো রাজবাড়ী দখল করে রাখে। ৯ ডিসেম্বর শহরের লক্ষীকোল এলাকায় বিহারিদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয়। বিহারিদের গুলিতে সেদিন বেশ কয়েকজন শহীদ হন।
১৬ ডিসেম্বরের পরে বিহারিদের পরাজিত করার জন্য জেলার সব অঞ্চল থেকে মুক্তিবাহিনীর বিভিন্ন দল রাজবাড়ীতে যুদ্ধের জন্য সংগঠিত হতে থাকে। ইতোমধ্যে শহিদুন্নবী আলম, ইলিয়াস মিয়া, সিরাজ আহম্মেদ, আবুল হাসেম বাকাউল, কামরুল হাসান লালী, রফিকুল ইসলামের কমান্ডে মুক্তিযোদ্ধারা চারদিকে ঘিরে রাখেন। এদের সাথে জেলার পাংশা থেকে জিল্লুল হাকিম, আব্দুল মতিন, নাসিরুল হক সাবু, আব্দুল মালেক, সাচ্চু, আব্দুল রব তাদের দল নিয়ে যোগদান করে বিরাহিদের আক্রমণ করেন। এতে শতাধিক বিহারি নিহত হয়। বিহারিদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধের কথা শুনে যশোর, মাগুরা, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর থেকে মুক্তিযোদ্ধারা রাজবাড়ীর মুক্তিযোদ্ধাসের সাথে একতত্বা প্রকাশ করে যুদ্ধ শুরু করেন। ১৮ ডিসেম্বর রাজবাড়ীকে শত্রুমুক্ত করেন।
রাজবাড়ীর দুই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুল হাকিম বলেন, দেশ স্বাধীনের আগের থেকেই এখানে স্বাধীনতা বিরোধীরা শক্তিশালী অবস্থায় ছিলো। সমগ্র দেশ স্বাধীন হলেও বিহারিরা রাজবাড়ীকে পাকিস্থান বানিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমরা মুক্তিযোদ্ধারা বিজয়ের দ্ইুদিন পর রাজবাড়ীকে মুক্ত করি। অনেক কষ্টে গড়া আমাদের রাজবাড়ী বলে আক্ষায়িত করেন জেলার এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।
রাজবাড়ী মুক্ত দিবস উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা