দিনাজপুর চিরিরবন্দরের পাঁচটি বধ্যভূমি চরম অযত্ন ও অবহেলায় রয়েছে। এসব গণকবরে সীমানা প্রাচীর না থাকায় দেখভালের অভাবে গো-চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে।
উপজেলায় আলোকডিহি ইউনিয়নের আলোকডিহি জে বি উচ্চ বিদ্যালয় চত্বর, ইসবপুর ইউনিয়নের কামারপাড়া-নওখৈর, আব্দুলপুর ইউনিয়নের বানিয়াজুগি, পুনট্টি ইউনিয়নের ভেলামতি নদীর তীর ও তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের বেলান নদীর তীরে গণকবর রয়েছে।
এসব গণকবরের মধ্যে শুধুমাত্র আলোকডিহি জে বি উচ্চ বিদ্যালয়ের গণকবরটিতে সীমানা প্রাচীর এবং মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে। তবে এটিতে নেই কোনো শহীদদের নাম ও ঠিকানা।
স্থানীয়রা জানায়, শহীদেরা বেঁচে আছেন তাদের আপনজনদের স্মৃতিসৌধে। বধ্যভূমিগুলোতে নেই কোনো সাইনবোর্ড, সীমানা প্রাচীর কিংবা ঘেরা। কোনো কোনো স্থান পরিত্যক্ত ও গো-চারণ ভূমিতে পরিণত।
চিরিরবন্দর উপজেলার রাণীরবন্দরের আলোকডিহি জে বি উচ্চ বিদ্যালয় চত্বরের বধ্যভূমিতে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভটি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ধ্বংস হতে চলেছে। অযত্ন-অবহেলার কারণে এর পাটাতন চুরি এবং কিছু অংশ ইছামতি নদীতে ধসে গেছে।
স্মৃতিস্তম্ভটি নোংরা ও জরাজীর্ণ হয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছে। বিজয়ের মাস এলে নতুন করে ঘষামাজা করা হলেও সারা বছর কেউ খোঁজ রাখে না।
জানা যায়, ১৯৭১সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাক-হানাদার বাহিনী এবং তাদের দোসররা সারা দেশে বর্বরোচিতভাবে নারকীয় গণহত্যা চালায়। এসব গণহত্যার মরদেহগুলো তারা একটি কবরে বা গর্তে কোনো রকমে পুঁতে রেখে চলে যায়।
চিরিরবন্দর উপজেলার মধ্যে রাণীরবন্দরের আলোকডিহি জে বি উচ্চ বিদ্যালয় চত্বরের বধ্যভূমিটিও চিহ্নিত করা হয় এবং স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়।
স্থানীয় সাংবাদিক এম এ কারী জানান, ওই স্থানটি সে সময় সমতল ভূমি ছিল। সেখানে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করে রেখেছিল। কিন্তু স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মিত হওয়ার পর রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পুরো চত্বরে সবসময় নোংরা-আবর্জনা থাকে। এর কিছু অংশ ইছামতি নদীতে ভেঙে গেছে। স্মৃতিস্তম্ভটির সংরক্ষণই নয়, পুরো স্থানটি সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘিরে বাগান করা হলে সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি পাবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই