নদীর এপার সখীপুর, ওপার বাসাইল। দুই পারের মানুষের যোগাযোগের এক মাত্র মাধ্যম একশ' ফুট বাঁশের সাঁকো। দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী নদীর নাম বংশাই। এই নদীর পার ঘেঁষা সখীপুরের সীমানায় গড়ে উঠেছে চাকদহ বাজার। এই বাজারে নিত্য প্রয়োজনে বাঁশের সাঁকো দিয়েই চলাচল করে নয়টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বংশাই নদীর পার ঘেঁষা সখীপুর ও বাসাইল উপজেলার চাকদহ, রাসরা, মিরিকপুর, ছৈদামপুর, হাতীবান্ধা, বেড়বাড়ী, নাইকেনবাড়ি, রতনপুর ও কাঞ্চনপুরসহ কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম এই বাঁশের সাঁকো। এই নয়টি গ্রামের নিকটবর্তী হাট-বাজারের নাম চাকদহ বাজার। এছাড়া আশেপাশে চার কিলোমিটারের মধ্যে কোন হাট-বাজার নেই। এই এলাকা থেকে বাসাইল সদর যাওয়ার দূরত্ব পাঁচ কিলোমিটার। ব্রিজ না থাকার কারণে ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার ঘুরে বাসাইল সদর হাসপাতাল ও জেলা শহরে যেতে হয়।
প্রতিদিন এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে মালামাল নিতে চমর দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে দুই উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ। ইচ্ছে হলেই ধান, চাউল, সার, পোল্ট্রি খামারের খাদ্য ও আসবাব পত্র নিয়ে বাড়ি যাওয়া যায়না। ব্রীজের অভাবে মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেলসহ মালবাহী যানবাহন নিয়ে প্রায় ১৫-২০ কিলোমিটার ঘুরে বাড়ি আসতে হয় বলে এলাকাবাসী জানায়। সব চেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হয় শিশু, বয়স্ক রোগী ও গর্ভবতী মা।
চাকদহ বাজার কমিটির সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. ফজলুর রহমান (ফাইজল) বলেন, উপজেলার সামগ্রিক উন্নয়নের চিত্রে চাকদাও গ্রামটি অনেক অনুন্নত ও অবহেলিত। শুধুমাত্র যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার কারণেই শতবছর বয়সীয় চাকদহ হাটটি প্রায় মারা যাওয়ার পথে। দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম হওয়ায় এই এলাকার মানুষদের অনেক দুর্ভোগ।
সংরক্ষিত ইউপি সদস্য জয়গন বেগম বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কালবার্ট করতে পারি কিন্তু এত বড় ব্রিজ করার ক্ষমতা নেই।
সমাজ সেবক আব্বাস আলী বলেন, নির্বাচনের সময় নেতারা অনেক কিছুই প্রতিশ্রুতি দেয় কিন্তু বংশাই নদীর চাকদহ ব্রিজটি কেউ করে না। দুই উপজেলা মিলে একটি আসন। বর্তমান সংসদ সদস্যের বাড়ি আমাদের এই এলাকাতেই ওনার কাছে জোড় সুপারিশ আমাদের এই ব্রিজটি তিনি করে দিবেন।
সখীপুর উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. ফরিদ আহমেদ বলেন, টাঙ্গাইল প্রজেক্ট নামের একটি প্রকল্পে ব্রিজটি নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই ব্রিজটি হলে দুই উপজের মানুষের যোগাযোগ সহজ হবে এবং দুর্ভোগ লাগব হবে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম বলেন, ওই এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি বংশাই নদীর উপর প্রায় দেড়শ ফুট একটি ব্রিজ খুব অল্প সময়ের মধ্যে করে দিবো। সেই সাথে ওই এলাকার রাস্তাগুলো প্রশস্ত ও পাকা করতে প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল