মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভার মেয়রের বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনাটি গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকেই হয়েছে বলে জানিয়েছে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট।
বুধবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক জানান, ঘটনার পর রাতভর বোম্ব ডিসপোসাল ইউনিউট ঘটনাস্থলে কাজ করেছে। এছাড়া সিআইডি, জেলা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলের আলামত পরীক্ষা করে বোমার কোনও আলামত পায়নি। পর্যবেক্ষণ শেষে বিস্ফোরণটি গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকেই হয়েছে বলে জানিয়েছে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা।
এর আগে মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে পৌরসভার রামগোপালপুর এলাকায় এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে পৌর মেয়র আব্দুস সালামের স্ত্রী, পৌরসভার ২ প্যানেল মেয়রসহ ১৩ জন দগ্ধ হয়েছে।
দগ্ধরা হলেন- মিরকাদিম পৌরসভার প্যানেল মেয়র রহিম বাদশা (৫৫), আওলাদ হোসেন (৪০), কাউন্সিলর দ্বীন ইসলাম, সোহেল, মেয়র আব্দুস সালামের দ্বিতীয় স্ত্রী কানন বালা (৪০), যুবলীগ কর্মী তাইজুল (২০), মোশারফ (৬২), মনির হোসেন (৫০), শ্যামল দাশ (৪৫), পান্না (৫০), কালু (৪০) ও মহিউদ্দিন।
এদের মধ্যে রহিম বাদশাকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি ১২ জনকে গুরুতর অবস্থায় রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। গুরুতর আহতদের মধ্যে মেয়রের স্ত্রীর কানন বালা বেগমকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আইসিউতে ভর্তি করা হয়েছে। তার দেহের ৬০ ভাগ পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নিয়ে মঙ্গলবার রাতে মেয়রের বাসার তৃতীয়তলার একটি কক্ষে মেয়রের সঙ্গে আলাপচারিতা করছিলেন পৌর কাউন্সিলরসহ অন্যান্যরা। হঠাৎ করেই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তে কক্ষের ভেতর আগুনের শিখা দেখা যায়। বিস্ফোরণে কক্ষের আসবাবপত্র, জানালার কাঁচ ফেঁটে চুরমার হয়ে গেছে। এ সময় বিস্ফোরণের শব্দ পেয়ে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে মেয়রের স্ত্রী ও ২ প্যানেল মেয়রসহ ১৩ জনকে দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
গ্যাসের লাইনের লিকেজ থেকে ঘরে গ্যাস ছড়িয়ে পড়ায় এ ঘটনা ঘটে বলে ধারণা করা হচ্ছিলো। সে সময় মেয়র স্ত্রী রান্নার জন্য গ্যাসের চুলা জ্বালাতে গিয়েছিল বলে জানান কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী।
সদর থানার ওসি আবুবক্কর সসিদ্দিক বলেন, রাতেই বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ফায়ার সার্ভিস ইউনিট ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জানায়-নবনির্বাচিত মেয়র আব্দুস সালামের বাসায় যেকোনও কারণে গ্যাস লিকেজ থাকায় পুরো বাসায় গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে এবং স্পার্কের ফলে বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে। বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব সহকারে তদন্ত চলছে।
বিডি প্রতিদিন/কালাম